কৃষকের মুখে হাঁসি
মির্জাগঞ্জে দিগন্ত জুড়ে বাতাসে দুলছে সরিষা ফুল

- আপডেট সময় : ০৪:১০:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৪৪৫ বার পড়া হয়েছে
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সরিষার ফুলে হলুদ বর্ণের ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। চলতি মৌসুমে উপজেলায় গতবারের চেয়ে বেশি জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ সহাস্রাধিক জমিতে বিভিন্ন প্রকারের রবি শষ্যের আবাদ হয়েছে। এ উপজেলার মাটি অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা রবি শষ্য জাতের এ ফলন উৎপাদনে খুব আগ্রহী থাকেন। তবে উপজেলায় বেশি আবাদ হয়েছে মুগডাল ও খেসারি ডালের।
ফেব্রুয়ারী মাসের পুরোটা সময় রবি শষ্যে আবাদে ব্যস্ত থাকেন এখানকার কৃষকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে ছয় হাজার ৮১৮ হেক্টর জমিতে রবি শষ্যে আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে মুখডাল ৩ হাজার হেক্টর, খেসারি দুই হাজার ২’শত হেক্টর, বোরো ধান ১৫০হেক্টর, তরমুজ ১৬৫ হেক্টর, সরিষা ৩০ হেক্টর, সূর্যমুখী ৩৫ হেক্টর, চিনাবাদাম ১২০ হেক্টর, মরিচ ৩২০ হেক্টর, গোলআলু ৪৮ হেক্টর, মিষ্টি আলু ৭০ হেক্টর ও বিভিন্ন প্রকারের সবজি ৬৮০ হেক্টর জমিতে এবারে রবি শষ্যের আবাদ হয়েছে।
এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকরা ফসল আবাদে ব্যস্ত রয়েছেন।
কৃষকরা তাদের অধিকাংশ জমিতে উচ্চফলনশীল বারি সরিষা-১৪ ও স্থানীয় জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হলে এবং দাম পেলে আগামী বছরও সরিষা চাষে আরও অনেকেই ঝুঁকে পড়বে। সরিষার জমিতে ধানের আবাদও ভালো হয় এবং বোরো চাষে খরচ কম হয়। ক্ষেতের মাঠজুড়ে বাতাসে দুলছে সরিষা ফুল। আর মৌ-মাছি ফুলের মধু আহরণেও ব্যস্ত। পোকা-মাঁকড় দমনে কৃষি কর্মকর্তা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এসব যথাযথ হয়ে উঠলে এবং এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা গাছ দ্রুত বেড়ে উঠেছে। বাম্পার ফলন আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। কৃষকের চোঁখেমুখে ফুঁটে উঠেছে আনন্দের হাঁসি। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক। উপজেলার সুলতানাবাদ গ্রামের সরিষা গৌতম চন্দ্র জানান, এ বছর ৩৩ শতাংশ জমিতে বারি সরিষা-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় এবারও সরিষা চাষ করেছি। স্থানীয় কৃষকরা জানান, সরিষা আবাদে খরচ কম। রোগ ও পোকার আক্রমণও কম হয়। চাষাবাদ পদ্ধতি সহজ। তাই কৃষকরা সরিষা চাষে বেশি আগ্রহী।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আবদুল্লা আল মামুন জানান, মির্জাগঞ্জে ফসলি জমিগুলোতে সরিষা উৎপাদন ভালো হয়। তবে উপজেলায় এ মৌসুমে মুগডাল ও খেসারী ডাল আবাদ হয়েছে ৫ সহাস্রাধিক হেক্টর জমিতে। বর্তমানে উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল (উফশী) বারি-১৪ জাতের সরিষা মাত্র ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যেই ঘরে তোলা যায়। অন্য ফসল আবাদে কোনো সমস্যা হয় না। ফলে সরিষা চাষে এ বছর কৃষকদের আগ্রহ গতবছরের চেয়ে অনেক বেড়েছে।