মিঠা পানির সংকটে অনাবাদি কৃষি জমি
অস্তিত্ব সংকটে ঐতিহ্যবাহী হেতালিয়ার খাল

- আপডেট সময় : ১১:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৪২৮ বার পড়া হয়েছে
দখল দূষন এবং পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী হেতালবাড়িয়ার খাল। এতে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ। এদিকে খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষণ করা যাচ্ছেনা মিঠাপানি। তাই শুঁকনো মৌসুমে অনাবাদি থাকছে হাজার হাজার একর কৃষি জমি। দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি খননের দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর শাখা থেকে হেতালবাড়িয়া খালের উৎপত্তি হয়েছে। দুই যুগ আগেও এ খালে চলাচল করতো যানবাহী ট্রলার সহ ছোট বড় নৌকা। এ খালের পানি ব্যবহার করেই কৃষকরা শুঁকনো মৌসুমে চাষাবাদ করতো শীতকালীন নানান সবজি। তবে যুগের আবর্তনে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব, দখল ও দূষণের কারণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে ঐতিহ্যের এ খালটি।
বর্তমানে খালটির রজপাড়া হেতালবাড়িয়া স্লুইজ সংলগ্ন প্রধান ফটকে পলি জমে পরে ভরাট হয়ে মাটির বড় স্তুপে পরিণত হয়েছে। যার কারণে ওই স্লুইজ থেকে খালে স্বাভাবিক পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি স্থানে মাটির বড় বড় স্তুপ সৃষ্টি হয়েছে। আবার অনেকেই খালটি দখল করে তুলেছেন ছোট ছোট স্থাপনা। তাই পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় প্রায় ২ কিলোমিটারের এ খালটির অর্ধেক এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।
শুধু এ হেতালবাড়িয়া খালই নয়, পানি প্রবাহ না থাকায় এ খালের সঙ্গে যুক্ত জীন খাল, মৌশার খাল ও স্বণির্ভর খালসহ অন্তত ৫ টি শাখা খাল এখন মৃতপ্রায়। ফলে শীত মৌসুমে মিঠা পানির অভাবে রজপাড়া ও পশ্চিম বাদুরতলী গ্রামের হাজারো কৃষক চাষাবাদ করতে পারছেনা।
টিয়াখালী ইউনিয়নের দাড়োগা বান এলাকার কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, আমাদের কলাপাড়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা এ মৌসুমে তরমুজ চাষ করেন। কিন্তু মিঠা পানির অভাবে আমাদের গ্রামের কৃষকদের ইচ্ছা শক্তি থাকা সত্ত্বেও আমাদের জমি খিল (অনাবাদি) রাখতে হয়। খাল মরে যাওয়ায় নদী থেকে পানি প্রবেশ করতে পারেনা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার বাহাদুরের কাছে খালটি খননের অনুরোধ জানাচ্ছি।
পশ্চিম বাদুরতলী গ্রামের কৃষক সালাম ফকির বলেন, স্বনির্ভর খালের ওখানে আমাদের নিজস্ব জমি রয়েছে। খালে পানি না থাকায় আমরা সেখানে রবিশষ্য সহ শীতকালিন সবজি চাষ করতে পারছিনা। যার কারণে শুধুমাত্র বর্ষা মৌসুমে আমন ধান চাষ করি। তাও অনেক সময় জমিতে বৃষ্টির পানি জমে ধানের বীজ নষ্ট হয়ে যায়। কারণ খাল মরে যাওয়ার কারণে বৃষ্টির পানি খাল থেকে নদীতে নামতে পারেনা। শুধু আমার জমিই নয় একটু বর্ষা হলে ওই এলাকার অধিকাংশ জমিতে পানি জমে থাকায় অনেক সময় চাষাবাদও করা যায়না। ওই ওলাকার অনেকের জমি প্রায় বছরই খিল (অনাবাদি) থাকে।
কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক বলেন, হেতালিয়ার খালের বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া খালটির দখল উচ্ছেদ এবং খননের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।