এবার সূর্যমুখী আবাদে এগিয়ে কলাপাড়া

- আপডেট সময় : ০২:১৩:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
- / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
সারাদেশের মধ্যে উপজেলার মধ্যে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় লবনাক্ত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। সূর্যমুখী কলাপাড়ায় একটি ব্রান্ডিং ফসল। পতিত জমিতে সূর্যমুখীর চাষে সফলতা এসেছে। ফলে উৎকৃষ্ট মানের তেলের চাহিদা পূরণ করে বাজারজাত করার অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ উপজেলায় ১৮’শ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। যা সারা বাংলাদেশের মধ্যে এ উপজেলাটি আবাদে প্রথম হয়েছে। বাম্পার ফলন হয়েছে এখানকার চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। এখানকার জমিতে লবণের উপস্থিতি আছে। আর এই লবনাক্ত জমিতে সূর্যমুখীর উৎপাদন ভালো হয়। এখানে মূলত বারি, সূর্যমুখী-২ এবং হাইসান ৩০ এসব জাতের চাষ হয়ে থাকে তবে হাইসান ৩০ সবচেয়ে বেশি ফলে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুরের কৃষক মো. ইউসুফ আলী বলেন, একটা সময় আমন ধানের পর আর কোন ফসল উৎপাদন করতাম না। গত দুই বছর ধরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শে লবন সহিষ্ণু সূর্যমূখী চাষের পরামর্শ দেয়। তার পর থেকেই আমরা সূর্যমুখী চাষের প্রতি ঝুঁকলাম। আমাদের পারিবারিক চাহিদা মেটানো সম্ভব তেলে পেট খারাপ করেনা।
আমিরাবাদ গ্রামের আবুল কালাম বলেন, আমি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। যে তেল পাই তা বিক্রি করি এবং নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে থাকি। বিগত বছর থেকে বাম্পার ফলন পাই। এ বছরও ভালো ফলন হবে আশা করি।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আরাফাত হোসাইন বলেন, সূর্যমুখী একটি লবন সহিষ্ণু ফসল। এখানকার মাটিতে লবনের উপস্থিতি আছে। তাই সোনায় সোহাগা বিপুল সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। এটি একটি উৎকৃষ্ট তেল এতে আছে ওমেগা ৩ ও ৬ যা শরীরে খারাপ চর্বি দূর করতে সাহায্য করে। এর তেল ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে, তক ভালো রাখে। এসিডিটি কমানোর উপাদান আছে এ তেলের মাঝে। দিনে দিনে সূর্যমুখীর চাষে আগ্রহ বাড়ছে উপকূলীয় অঞ্চল কলাপাড়ায়। তবে এখানকার খাল খনন করে পানি রাখা গেলে আরো আগ্রহ বাড়বে কৃষকদের মাঝে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জে এইচ লেলিন খান বলেন, বীজে ৪০-৪৫ শতাংশ লিনোলিক এসিড রয়েছে। এর তেলে ক্ষতিকারক ইরোসিক এসিড নেই। এজন্য হার্টের রোগীদের জন্য উপকারী।
কলাপাড়া উপজেলাটি বহুমাত্রিক ফসলের জন্য উপযোগী। হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি থাকত। সেদিন পাল্টে গেছে সময়ের বিবর্তনে এখন অনাবাদি থাকে কম। যাও থাকে তাতে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করতে পারলে অনাবাদি জমি শূন্যের কোঠায় থাকত। সূর্যমুখী আবাদে খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি লাভবান হওয়ার পরিমাণ বেশি তাই সূর্যমূখী আবাদে ঝুঁকছে এখানকার কৃষকরা।