সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি
ভবিষ্যতে কেমন হতে পারে বাংলাদেশ

- আপডেট সময় : ০৬:০৩:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
- / ৪৬৫ বার পড়া হয়েছে
লেখক: হাফিজুর রহমান আকাশ
সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির হার বর্তমানে অত্যন্ত বেশি, প্রতিদিন শতে শতে কর্মচারীর অবৈধ সম্পদের খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এই ব্যাপক দুর্নীতি দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রশাসন এবং জনআস্থা নষ্ট করছে।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশ ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯তম স্থানে রয়েছে এবং স্কোর ১০০-এর মধ্যে ২৪, যা উচ্চ মাত্রার দুর্নীতিকে নির্দেশ করে। এই সমস্যা বিভিন্ন সেক্টরে ছড়িয়ে পড়েছে, যেমন আইনশৃঙ্খলা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং জনসেবা। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে জনসাধারণকে ঘুষ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির জন্য প্রয়োজনীয় সেবাগুলি পেতে কঠিন হয়ে পরেছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তৈরি করা আইন ও প্রতিষ্ঠানগুলি, যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রায় অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যদিও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে আইন ও বিধানাবলী প্রণয়ন করা হয়েছে, তাদের বাস্তবায়ন দুর্বল। উদাহরণস্বরূপ, সাম্প্রতিক সংশোধনীতে ACC-এর ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে, যার ফলে সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের আগে সরকারি অনুমতির প্রয়োজন হয়, যা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে।
দুর্নীতির ফলে নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটি একটি অসাম্য যেখানে জনগণের সম্পদ দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের কাছে চলে যাচ্ছে। এর ফলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয় এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনআস্থা কমে যায়। সমীক্ষায় দেখা যায় যে প্রায় ৭০% তরুণরা দুর্নীতিকে দেশের অগ্রগতির প্রধান বাধা হিসেবে দেখেন।
এই সংকট মোকাবেলার জন্য বিশেষজ্ঞরা শক্তিশালী রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি, স্বাধীন দুর্নীতি দমন সংস্থা এবং ব্যাপক জনসচেতনতা প্রচারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছেন। যদি কঠোর সংস্কার এবং দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপের কড়া প্রয়োগ না হয়, তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, যা দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেবে।