একঝাঁক উদ্যোমী তরুণদের সমন্বয় “বাংলাদেশের কাগজ” নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। শত শত দৈনিক পত্রিকা, টিভি চ্যানেল ও নিউজ পোর্টালের ভীড়ে “বাংলাদেশের কাগজ” নামক এই নিউজ পোর্টালটি কতটা পাঠকের চাহিদা পূরণ করতে পারবে, কতটা পাঠক প্রিয় হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকাটাই স্বাভাবিক। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গণমাধ্যম বাজারে আসছে। গণমাধ্যমের সাথে সাথে বাড়ছে গণমাধ্যম কর্মীও।

পাঠক চাহিদা পূরণ করতে গণমাধ্যমগুলো নানামুখী উদ্যোগ নিলেও দু’চারটে ছাড়া বেশিরভাগ গণমাধ্যমই পাঠক চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। কারণ গণমাধ্যম বাড়ার সাথে সাথে পাঠকের চাহিদাও বেড়েছে বহুগুণ। পাঠকের চাহিদার কোন পরিধি নেই। নেই কোন সীমারেখা। এসব বিবেচনায় নিয়েই এই নিউজ পোর্টালটির আত্মপ্রকাশ হচ্ছে। শীঘ্রই পাঠকের চাহিদা পূরণ করে সকলের প্রিয় একটি পোর্টাল হিসেবে পরিচিতি এবং আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস রয়েছে।

গণমাধ্যমগুলো সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে প্রিন্ট থেকে ইলেক্ট্রনিক, ইলেকট্রনিক থেকে অনলাইন ভার্সনে চলে এসেছে। এসব কিছু করা হচ্ছে পাঠক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে।

আশির দশক থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত দেশে প্রিন্ট মিডিয়ার আধিপত্য ছিলো। এরপর শুরু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার আধিপত্য। মানুষ খবর পড়ার চেয়ে খবর দেখতে এবং শোনার প্রতি ঝুঁকতে শুরু করে। প্রিন্ট মিডিয়াগুলোও পাঠক চাহিদা পূরণে প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি অনলাইন ভার্সনে চলে আসছে। লক্ষ্য একটাই পাঠক চাহিদা পূরণের মধ্যদিয়ে ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করা। এতকিছুর পরও আমাদের গণমাধ্যমগুলো কি পাঠকের চাহিদা পূরণ করতে পারছে?

জেলে, কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে চাকরিজীবি, কর্মজীবী, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদ একেকজনের চাহিদা একেক রকম। এসব দিক বিবেচনা করে “বাংলাদেশের কাগজ” অনলাইন নিউজ পোর্টালটি আত্মপ্রকাশ করেছে। খবরের পিছনের খবর তুলে এনে পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে একঝাঁক তরুণ সাংবাদিক এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, মৎস্য, কৃষি, শিক্ষা, পর্যটন এসব বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে এই নিউজ পোর্টালটির আত্মপ্রকাশ করা হয়েছে। উপকূলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদের অজানা কথাগুলো তুলে ধরতে আমাদের এই পথচলা।

বেশিরভাগ গণমাধ্যমের মালিক ব্যবসায়ী আর। তারা তাদের ব্যবসায়িক সফলতা বিবেচনায় রেখে গণমাধ্যমগুলো পরিচালিত করে আসছেন। এসব গণমাধ্যমের সম্পাদক থেকে শুরু করে সাংবাদিক নিয়োগকৃত। মালিকের ব্যবসায়িক দিক গুরুত্ব দিয়ে তাদের সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করতে হয়। যার কারণে অনেক কিছুতেই তারা পাঠকের চাহিদার চেয়েও ব্যবসায়িক চাহিদাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

“বাংলাদেশের কাগজ” অনলাইন নিউজ পোর্টালটির সম্পাদক, প্রকাশক, নির্বাহী সম্পাদক, ব্যবস্থাপক, বিজ্ঞাপন ম্যানেজারসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেই গণমাধ্যমকর্মী। বয়সে নবীন হলেও লেখনী এবং কর্ম দক্ষতার দিক দিয়ে সকলেই পরিশ্রমী এবং দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম। ব্যবসায়িক দিককে পিছনে ফেলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতেই একঝাঁক তরুণ গণমাধ্যমকর্মী এই নিউজ পোর্টালটির দায়িত্ব নিয়েছে। এর একক কোন মালিকানা নেই। সকলেই এর মালিক। এখানেই অন্যদের চেয়ে এই নিউজ পোর্টালটির বৈশিষ্ট্য আলাদা।

“সত্যের নতুন দিগন্ত” এই স্লোগানকে সামনে রেখে ‘বাংলাদেশের কাগজে’র পথচলা শুরু হয়েছে। চারিদিকে যখন হলুদ ও অপ-সাংবাদিকতার ছড়াছড়ি তখন তরুণ গণমাধ্যমকর্মীরা শত কাগজের ভীড়ের মাঝেও মূল ধারার সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।

নতুন বাংলাদেশের নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় “বাংলাদেশের কাগজের” পথচলা কঠিন হলেও সেই কঠিন পথ পাড়ি দিতেই সত্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে আমাদের এগিয়ে চলার অঙ্গিকার।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন বিপ্লবের মধ্যদিয়ে অর্জিত বিজয়কে ধরে রেখে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ সুগম হবে এমন প্রত্যাশার জায়গা থেকে আমরা বলতে চাই আগামীর বাংলাদেশ হবে আপামর মানুষের।

কোন গোষ্ঠীর বা কারো তাঁবেদারি করা আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নয়। রাজনৈতিক বেড়াজাল থেকে বেড়িয়ে এসে পথচলা দুরূহ হলেও সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে বাংলাদেশের কাগজের সাংবাদিকরা অটল থাকবে। এমন বিশ্বাস ও আস্থা পাঠক সমাজ বাংলাদেশের কাগজের উপর রাখতে পারেন।

তাই আমাদের এই নতুন পথচলায় দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতায় এগিয়ে যাবে “বাংলাদেশের কাগজ”। এরই মধ্যদিয়ে পাঠকের প্রত্যাশা পূরণ হবে নিশ্চিত।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশের কাগজ