ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ Logo স্বামীর মৃত্যুতে শিশু সন্তান ও বৃদ্ধা শ্বাশুরীকে নিয়ে অসহায় জীবন গীতা রানীর Logo মির্জাগঞ্জে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি গ্রেফতার Logo কলাপাড়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিক শিক্ষার্থীর বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান, আত্মহত্যার হুমকি

কুয়াকাটার প্রাকৃতিক স্বর্গ ‘লেম্বুর বন’

বিশেষ প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • / ৩৭২ বার পড়া হয়েছে

Oplus_131072

পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের কোল ঘেঁষে অবস্থিত একটি অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক স্থান লেম্বুরবন বা লেম্বুরচর। স্থানীয়দের কাছে এটি সূর্যাস্ত পয়েন্ট  নামেও পরিচিত। নামে লেম্বুর চর হলেও এখানে কোনো লেবু গাছ নেই, বরং আছে নানান প্রজাতির গাছপালা ও জীববৈচিত্র্যে ভরা এক মনোরম পরিবেশ। সুন্দরবনের অংশবিশেষ হওয়ায় এই চরের প্রকৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ।

প্রায় ১হাজার একর আয়তনের এই চরে রয়েছে কেওড়া, গেওয়া, গোরান, কড়ই, ঝাউগাছ, গোলপাতা সহ নানা প্রজাতির গাছ। একসময় এটি সুন্দরবনেরই অংশ ছিল, তবে এখন এটি মূল সুন্দরবন থেকে বিচ্ছিন্ন। লেম্বুর চরের শেষ প্রান্তে দাঁড়ালে সুন্দরবনের সবুজ গাছের সারি দেখা যায়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনবদ্য দৃশ্য।

সূর্যাস্তের সময় লেবুর চরের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। সূর্যের সোনালি আভা চরের সবুজ প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তোলে, যা পর্যটকদের মনে এক অপার্থিব অনুভূতি জাগায়।

লেম্বুর চরে কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে কুয়াকাটার লেম্বুর চর যেতে হলে প্রথমে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পৌঁছাতে হবে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার প্রধান দুটি উপায় হলো সড়কপথ ও নদীপথ।

সড়কপথে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা দূরত্ব প্রায় ২৯৪ কিলোমিটার। ভ্রমণে সময় লাগে মাত্র ৬-৭ ঘন্টা (পদ্মা সেতু হওয়ায় এখন সময়ও কম লাগে)।

নন-এসি বাসের মধ্যে সাকুরা পরিবহন, শ্যামলী, হানিফ, টি আর ট্রাভেলস (ভাড়া ৭৫০-৯০০ টাকা)। এসি বাসের মধ্যে গ্রীনলাইন, ইউরো কোচ (ভাড়া ১১০০-১৬০০ টাকা) যাতায়াতে খরচ পড়বে।  সায়েদাবাদ, আবদুল্লাপুর, আরামবাগ বা গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে যাত্রার টিকেট কিনে নিতে পারেন।

এছাড়াও নদী পথে ঢাকার সদরঘাট নৌ টার্মিনাল থেকে পটুয়াখালী বা বরিশালগামী লঞ্চে করে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। সাধারণত সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা এর মধ্যে লঞ্চ ছাড়ে।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে লেম্বুরবন ৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে সাইকেল ভাড়া নিয়ে ঘুরে দেখা যায়। ভ্যান বা ইজি বাইক ভাড়া করেও যাওয়া যায়। সকালে রওনা দিলে দিনেই ঘুরে কুয়াকাটায় ফিরে আসা যায়।

কোথায় থাকবেন?
কুয়াকাটায় থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। সরকারি আবাসনগুলোর মধ্যে রয়েছে— এলজিইডি রেস্ট হাউজ, সড়ক ও জনপথ রেস্ট হাউজ, রাখাইন কালচার একাডেমীর রেস্ট হাউজ।

প্রাইভেট হোটেল ও রিসোর্টের মধ্যে রয়েছে: সাগর কন্যা পর্যটন হলিডে হোমস, ইয়ুথ ইন হোটেল, হোটেল গ্রেভার ইন, সি ভিউ হোটেল, সিকদার রিসোর্ট, কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেল, ম্যানগ্রোভ হোটেল, পর্যটন মোটেল, হোটেল বীচ হ্যাভেন।

কোথায় খাবেন?
লেবুর চরের আশেপাশে ছোট ছোট ফুড শপে তাজা সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়া ভাজি পাওয়া যায়। কুয়াকাটায় ভালো খাবারের জন্য কিছু রেস্টুরেন্ট হলো— জিরো পয়েন্টে জয়, হোটেল সানরাইজ,  বার্মা হোটেল, রামজান রেস্তোরা, অতিথি ও বৈশাখী রেস্টুরেন্ট।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়ঃ

নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত লেবুর চর ভ্রমণের আদর্শ সময়, কারণ এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য লেবুর চর একটি অসাধারণ স্থান। লেবুর চর প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য। কুয়াকাটার কোলাহল থেকে দূরে এই নির্জন চরে গেলে মনে হবে প্রকৃতির কোলে হারিয়ে গেছেন। সুন্দরবনের অংশবিশেষ হওয়ায় এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। তাই সময় পেলে অবশ্যই লেবুর চরে ঘুরে আসবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

কুয়াকাটার প্রাকৃতিক স্বর্গ ‘লেম্বুর বন’

আপডেট সময় : ০৫:২৫:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের কোল ঘেঁষে অবস্থিত একটি অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক স্থান লেম্বুরবন বা লেম্বুরচর। স্থানীয়দের কাছে এটি সূর্যাস্ত পয়েন্ট  নামেও পরিচিত। নামে লেম্বুর চর হলেও এখানে কোনো লেবু গাছ নেই, বরং আছে নানান প্রজাতির গাছপালা ও জীববৈচিত্র্যে ভরা এক মনোরম পরিবেশ। সুন্দরবনের অংশবিশেষ হওয়ায় এই চরের প্রকৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ।

প্রায় ১হাজার একর আয়তনের এই চরে রয়েছে কেওড়া, গেওয়া, গোরান, কড়ই, ঝাউগাছ, গোলপাতা সহ নানা প্রজাতির গাছ। একসময় এটি সুন্দরবনেরই অংশ ছিল, তবে এখন এটি মূল সুন্দরবন থেকে বিচ্ছিন্ন। লেম্বুর চরের শেষ প্রান্তে দাঁড়ালে সুন্দরবনের সবুজ গাছের সারি দেখা যায়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনবদ্য দৃশ্য।

সূর্যাস্তের সময় লেবুর চরের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। সূর্যের সোনালি আভা চরের সবুজ প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তোলে, যা পর্যটকদের মনে এক অপার্থিব অনুভূতি জাগায়।

লেম্বুর চরে কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে কুয়াকাটার লেম্বুর চর যেতে হলে প্রথমে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পৌঁছাতে হবে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার প্রধান দুটি উপায় হলো সড়কপথ ও নদীপথ।

সড়কপথে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা দূরত্ব প্রায় ২৯৪ কিলোমিটার। ভ্রমণে সময় লাগে মাত্র ৬-৭ ঘন্টা (পদ্মা সেতু হওয়ায় এখন সময়ও কম লাগে)।

নন-এসি বাসের মধ্যে সাকুরা পরিবহন, শ্যামলী, হানিফ, টি আর ট্রাভেলস (ভাড়া ৭৫০-৯০০ টাকা)। এসি বাসের মধ্যে গ্রীনলাইন, ইউরো কোচ (ভাড়া ১১০০-১৬০০ টাকা) যাতায়াতে খরচ পড়বে।  সায়েদাবাদ, আবদুল্লাপুর, আরামবাগ বা গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে যাত্রার টিকেট কিনে নিতে পারেন।

এছাড়াও নদী পথে ঢাকার সদরঘাট নৌ টার্মিনাল থেকে পটুয়াখালী বা বরিশালগামী লঞ্চে করে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। সাধারণত সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা এর মধ্যে লঞ্চ ছাড়ে।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে লেম্বুরবন ৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে সাইকেল ভাড়া নিয়ে ঘুরে দেখা যায়। ভ্যান বা ইজি বাইক ভাড়া করেও যাওয়া যায়। সকালে রওনা দিলে দিনেই ঘুরে কুয়াকাটায় ফিরে আসা যায়।

কোথায় থাকবেন?
কুয়াকাটায় থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। সরকারি আবাসনগুলোর মধ্যে রয়েছে— এলজিইডি রেস্ট হাউজ, সড়ক ও জনপথ রেস্ট হাউজ, রাখাইন কালচার একাডেমীর রেস্ট হাউজ।

প্রাইভেট হোটেল ও রিসোর্টের মধ্যে রয়েছে: সাগর কন্যা পর্যটন হলিডে হোমস, ইয়ুথ ইন হোটেল, হোটেল গ্রেভার ইন, সি ভিউ হোটেল, সিকদার রিসোর্ট, কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেল, ম্যানগ্রোভ হোটেল, পর্যটন মোটেল, হোটেল বীচ হ্যাভেন।

কোথায় খাবেন?
লেবুর চরের আশেপাশে ছোট ছোট ফুড শপে তাজা সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়া ভাজি পাওয়া যায়। কুয়াকাটায় ভালো খাবারের জন্য কিছু রেস্টুরেন্ট হলো— জিরো পয়েন্টে জয়, হোটেল সানরাইজ,  বার্মা হোটেল, রামজান রেস্তোরা, অতিথি ও বৈশাখী রেস্টুরেন্ট।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়ঃ

নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত লেবুর চর ভ্রমণের আদর্শ সময়, কারণ এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য লেবুর চর একটি অসাধারণ স্থান। লেবুর চর প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য। কুয়াকাটার কোলাহল থেকে দূরে এই নির্জন চরে গেলে মনে হবে প্রকৃতির কোলে হারিয়ে গেছেন। সুন্দরবনের অংশবিশেষ হওয়ায় এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। তাই সময় পেলে অবশ্যই লেবুর চরে ঘুরে আসবেন।