ঢাকা ০৬:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য পেশা Logo ঋণ বাতিল করে জলবায়ু অর্থায়নের দাবিতে কলাপাড়ায় মানববন্ধন সাইকেল শোভাযাত্রা Logo ‎মির্জাগঞ্জে দাদীর সাথে অভিমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নিস্ক্রিয় ট্যুরিস্ট পুলিশ

কুয়াকাটায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি পর্যটকদের ক্ষোভ

আল-আমিন অনিক
  • আপডেট সময় : ০৬:২৫:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৮৯২ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা ছুটে আসেন সমুদ্র ও প্রকৃতির টানে। বিগত দিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা কেঁটে যাওয়ায় সাপ্তাহিক ছুটিসহ অন্যান্য দিনগুলোতেও রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকে মুখর থাকে কুয়াকাটা। তবে আগত পর্যটকদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ। সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিনিয়ত এভাবে চলতে থাকলে কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন পর্যটকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে কুয়াকাটার সূর্যোদয় পয়েন্টে ঝিনাইদহের আলমগীর নামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় আতঙ্কিত রয়েছেন পর্যটকরা। তবে এ ঘটনায় মহিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

প্রবাসীর স্ত্রী লীমা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সকালে কুয়াকাটার গঙ্গামতি নামক স্থানে সূর্যোদয় দেখতে গেলে বনের ভেতর থেকে লুঙ্গি পড়া এবং মুখে কালো কাপড় বাঁধা এক লোক তার হাত থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে দৌড়ে বনের ভেতর চলে যায়। আশেপাশে কোন পুলিশ সদস্য না থাকায় ভয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।  এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

খুলনা থেকে আসা নবদম্পতি শাকিল-মেহেরুন বলেন, আমরা খুব সকালে সূর্যোদয় দেখার জন্য মোটরসাইকেল যোগে গঙ্গামতি পয়েন্টে যাই। তবে সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্যদের উপস্থিতি আমাদের চোখে পড়েনি।

ঝিনাইদহ থেকে আসা কামাল হোসেন বলেন, সূর্যোদয় পয়েন্ট কুয়াকাটা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে। এই জন বিচ্ছিন্ন এলাকায় টুরিস্ট পুলিশের কোনো তৎপরতা আমরা লক্ষ্য করিনি। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে এসেছি। আমরা নিরাপত্তার অভাব অনুভব করেছি।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, সম্প্রতি স্পিডবোর্ড চালকের হাতে এক পর্যটক লাঞ্চিত হয়েছেন। এর কিছুদিন পর মোটরবাইক চালকের মারধরের এক পর্যটকের হাত ভাঙ্গার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত ক্যামেরাম্যান, ইজিবাইক চালকদের অসদাচরণে অতিষ্ঠ পর্যটকরা। এরপরও নিস্ক্রিয় রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝে।

এ বিষয়ে ট্যুর গাইড এসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম বাচ্চু বলেন, বর্তমান ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম বেশিরভাগ বক্সের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। অন্যথায় কুয়াকাটা থেকে মুখে ফিরিয়ে নিতে পারে পর্যটকরা। আমরা চাই দর্শনীয় সকল স্পটে পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশের টহল জোরদার করা হোক।

এ বিষয়ে টোয়াকের প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রমে আমরা হতাশ। ইতোমধ্যে কুয়াকাটায় কিছু বিছিন্ন ঘটনায় তাদের কোন কার্যক্রম আমাদের চোঁখে পড়েনি। পর্যটকদের নিরাপত্তার অবনতি হলে কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন পর্যটকরা। কুয়াকাটা যে কয়টি দর্শনীয় স্পট রয়েছে সবখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হলে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে পারবে।

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের এএসপি হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে কাউয়ার চরে। ঘটনার পর পরই আমরা ওখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে আজকে ওখানে আমাদের পুলিশ ছিলো না। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ফোনটি উদ্ধারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিস্ক্রিয় ট্যুরিস্ট পুলিশ

কুয়াকাটায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি পর্যটকদের ক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৬:২৫:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা ছুটে আসেন সমুদ্র ও প্রকৃতির টানে। বিগত দিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা কেঁটে যাওয়ায় সাপ্তাহিক ছুটিসহ অন্যান্য দিনগুলোতেও রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকে মুখর থাকে কুয়াকাটা। তবে আগত পর্যটকদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ। সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিনিয়ত এভাবে চলতে থাকলে কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন পর্যটকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে কুয়াকাটার সূর্যোদয় পয়েন্টে ঝিনাইদহের আলমগীর নামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় আতঙ্কিত রয়েছেন পর্যটকরা। তবে এ ঘটনায় মহিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

প্রবাসীর স্ত্রী লীমা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সকালে কুয়াকাটার গঙ্গামতি নামক স্থানে সূর্যোদয় দেখতে গেলে বনের ভেতর থেকে লুঙ্গি পড়া এবং মুখে কালো কাপড় বাঁধা এক লোক তার হাত থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে দৌড়ে বনের ভেতর চলে যায়। আশেপাশে কোন পুলিশ সদস্য না থাকায় ভয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।  এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

খুলনা থেকে আসা নবদম্পতি শাকিল-মেহেরুন বলেন, আমরা খুব সকালে সূর্যোদয় দেখার জন্য মোটরসাইকেল যোগে গঙ্গামতি পয়েন্টে যাই। তবে সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্যদের উপস্থিতি আমাদের চোখে পড়েনি।

ঝিনাইদহ থেকে আসা কামাল হোসেন বলেন, সূর্যোদয় পয়েন্ট কুয়াকাটা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে। এই জন বিচ্ছিন্ন এলাকায় টুরিস্ট পুলিশের কোনো তৎপরতা আমরা লক্ষ্য করিনি। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে এসেছি। আমরা নিরাপত্তার অভাব অনুভব করেছি।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, সম্প্রতি স্পিডবোর্ড চালকের হাতে এক পর্যটক লাঞ্চিত হয়েছেন। এর কিছুদিন পর মোটরবাইক চালকের মারধরের এক পর্যটকের হাত ভাঙ্গার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত ক্যামেরাম্যান, ইজিবাইক চালকদের অসদাচরণে অতিষ্ঠ পর্যটকরা। এরপরও নিস্ক্রিয় রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝে।

এ বিষয়ে ট্যুর গাইড এসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম বাচ্চু বলেন, বর্তমান ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম বেশিরভাগ বক্সের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। অন্যথায় কুয়াকাটা থেকে মুখে ফিরিয়ে নিতে পারে পর্যটকরা। আমরা চাই দর্শনীয় সকল স্পটে পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশের টহল জোরদার করা হোক।

এ বিষয়ে টোয়াকের প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রমে আমরা হতাশ। ইতোমধ্যে কুয়াকাটায় কিছু বিছিন্ন ঘটনায় তাদের কোন কার্যক্রম আমাদের চোঁখে পড়েনি। পর্যটকদের নিরাপত্তার অবনতি হলে কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন পর্যটকরা। কুয়াকাটা যে কয়টি দর্শনীয় স্পট রয়েছে সবখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হলে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে পারবে।

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের এএসপি হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে কাউয়ার চরে। ঘটনার পর পরই আমরা ওখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে আজকে ওখানে আমাদের পুলিশ ছিলো না। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ফোনটি উদ্ধারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।