একই জায়গায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত। রয়েছে দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার সৈকত। আর সৈকতে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। রয়েছে বিশাল ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। রয়েছে পাখ-পাখালির কলকাকুলি এবং লাল কাকঁড়ার দলের অবাধ ছুটো ছুটির দৃশ্য। এছাড়া সৈকতের পাতা বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করা যায় বিশাল সমুদ্রের ছোট বড় ঢেউ। সর্ব দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর এ দর্শনীয় স্থানটির নাম সাগরকন্যা কুয়াকাটা। একসময় ঢাকা-কুয়াকাটা ২৯৪ কিলোমিটারে ১২টি ফেরি থাকলেও ২০২১ সালের অক্টোবরে পায়রা নদীর ওপর লেবুখালী সেতু এবং ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে কুয়াকাটার সঙ্গে মেলবন্ধ তৈরি হয় দেশের সব জেলার। তাই মনোমুগ্ধকর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত আগমন ঘটে হাজার হাজার পর্যটকের। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ বিভিন্ন উৎসব পার্বনের ছুটিতে লাখ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটে এ পর্যটন নগরীতে। সমুদ্রের বিশালতা এবং সৈকতের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে আপনিও আসতে পারেন কুয়াকাটায়।

কুয়াকাটার আদি ইতিহাস:

স্থানীয়দের ধারণা মতে, ১৮ শতকে মুঘল শাসকদের দ্বারা বার্মা থেকে বিতারিত হয়ে আরাকানীরা এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করেন। তখন সেখানে সুপেয় পানির অনেক অভাব ছিলো। পানির অভাব পূরণ করতে তারা প্রচুর কুয়ো বা কুপ খনন করেছিলেন। সেই কুয়া থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয়ে যায় কুয়াকাটা।

কীভাবে যাবেন কুয়াকাটায়?

যোগাযোগ ব্যবস্থা: ঢাকা থেকে কুয়াকাটা আসার জন্য সবচেয়ে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা হলো সদরঘাট থেকে লঞ্চে পটুয়াখালী অথবা কলাপাড়া। সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটা। ঢাকা থেকে পটুয়াখালী ও কলাপাড়া রুটে চলাচল করে বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল লঞ্চ। এসব লঞ্চে প্রথম শ্রেনীর দ্বৈত কেবিনের ভাড়া ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। পটুয়াখালী বাস স্টেশন থেকে প্রতি ঘন্টায় কুয়াকাটার বাস ছাড়ে। ভাড়া ১৫০ টাকা। আর কলাপাড়া থেকেও প্রতি ঘন্টায় বাস ছাড়ে। ভাড়া ৫০ টাকা। এছাড়া ঢাকা থেকে লঞ্চে বরিশাল এসে সেখান থেকেও বাসে কুয়াকাটা আসা যায়। ঢাকার সদর ঘাট থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী ও কলাপাড়ার লঞ্চগুলো ছাড়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায়। ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মিরপুরসহ অন্তত ১০ টি স্পট থেকে সরাসরি প্রতিনিয়ত অন্তত অর্ধশতাধিক কোম্পানীর বিলাসবহুল বাস চলাচল করে কুয়াকাটা রুটে। এর মধ্যে স্লিপার বাসও রয়েছে। ভাড়া ৭০০ থেকে ২০০০ টাকা।

কুয়াকাটা ভ্রমনে সহযোগিতা নিতে পারেন ট্যুর অপারেটরদের। কুয়াকাটায় ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) নামের একটি সংগঠন রয়েছে। এ সংগঠনে অন্তত অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছে। তারা সব সময় পর্যটকের সেবায় নিয়োজিত থাকেন। তাদের সহযোগিতা নিলে আপনার ভ্রমণ আরও সহজ হতে পারে।

কুয়াকাটায় পৌঁছে কোথায় থাকবেন?

কুয়াকাটায় থ্রি ষ্টার এবং টু স্ট্রার মানের অন্তত ৩ শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল এবং কটেজ রয়েছে। কুয়াকাটায় পৌঁছে এসব মোটেল ঘুরে দেখে পছন্দসই হোটেলে থাকতে পারবেন। ভাড়া ১৫০০ থেকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অবশ্যই দরদাম করে নিবেন। এছাড়া সেখানে অত্যাধুনিক মানের রেষ্টুরেন্ট এবং খাবার হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে ফ্রেশ ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই দরদাম করে নিতে হবে।

হাতে অন্তত ৩ দিন সময় নিয়ে আসলে কুয়াকাটার অধিকাংশ পর্যটন স্পট স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে দেখতে পারবেন। মোটরসাইকেল, সিএনজি, ইজিবাইক, অটোরিক্সা অথবা ভ্যানে এসব পর্যটন স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন।

যে পর্যটন স্পট উপভোগ করতে পারবেন:

কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট: কুয়াকাটা বাসস্ট্যান্ড থেকে ৩ কিলোমিটার অদূরে অবস্থিত কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট। বাসস্ট্যান্ড থেকে যে কোন যানবাহনে পৌঁছাতে পারবেন সেখানে। সেখানে রয়েছে ফয়েজ মিয়ার নারিকেল বাগান, একই স্থানে মসজিদ-মন্দির, সমুদ্রের উতাল পাতাল ঢেউ এবং সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন। সেখানে গেলে সৈকতের পাতা বেঞ্চিতে উপভোগ করতে পারবেন দক্ষিণা বাতাসের সঙ্গে বিশাল সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন। সমুদ্রের এ মোহনীয় গর্জন আপনার হৃদয়কে শীতল করবে। এছাড়া ঘোড়া ও ওয়াটার বাইকসহ বিভিন্ন বাহনে চড়ে উপভোগ করতে পারবেন প্রকৃতির অপরুপ লীলাভূমি।

শুঁটকি পল্লী:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পশ্চিমে জেলে পল্লীর অবস্থান। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুঁটকি তৈরির মৌসুম চলে সেখানে। সমুদ্র থেকে মাছ ধরে সৈকতের পাশেই অন্তত অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। কুয়াকাটা চৌরাস্তা থেকে সড়ক পথে অথবা সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে বীচ হয়ে বাস ছাড়া যে কোন যানবাহনে যেতে পারবেন সেখানে। সেখান গেলে জেলেদের শুঁটকি তৈরীর প্রক্রিয়া উপভোগ করতে পারবনে। এছাড়া সেখান থেকে কম দামে কিনে নিতে পারবেন পছন্দের মাছের শুঁটকি।

লেম্বুর বন ও তিন নদীর মোহনা:

শুঁটকি পল্লীর পশ্চিম পাশে লেম্বুরবন। সেখানে দাড়িয়ে খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে পারবেন সূর্যাস্ত। লেম্বুর বনে এক সময় বিভিন্ন মেছো বাঘ, বন মোরগ, বানর, বুনো শুকর ও নানান পশু থাকলেও ভাঙ্গনের কবলে অনেকটা বন বিলীন হয়ে যাওয়ায় সেগুলো দেখা যায় না। তবে সন্ধ্যায় লেম্বুর বনের পাখ পাখালির কিচির মিচির শব্দ আপনাকে মুগ্ধ করবে। লেম্বুর বনের এক কিলোমিটার পশ্চিমে তিন নদীর মোহনা। সেখানে নতুন করে বনায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে বন বিভাগ। তিন নদীর পানি, সমুদ্রের বুকে আছড়ে পড়া ঢেউ, বর্ষা মৌসুমে গুল্মলতা, লাল কাকড়ার ছুটোছুটি এবং লাল কাড়কার নিপুর ছোয়ায় আকা আলপনা উপভোগ করতে পারবেন সেখানে।

ফাতরার বন:

তিন নদীর মোহনার পরে আরও পশ্চিম দিকে ফাতরার বনের অবস্থান। কুয়াকাটা থেকে ফাতরার বনে যেতে হলে আপনাকে ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করতে হবে। অথবা প্রতিদিন সকালে সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে ফাতরার বনের উদ্দেশ্যে ট্রলার ছেড়ে যায়। সে ট্রলারে অন্যান্য পর্যটকের সঙ্গে সেখানে যেতে পারবেন। সেখানে গেলে সুন্দরবনের প্রায় সব বৈশিষ্ট্য চোখে পড়বে। দেখতে পাবেন মেছো বাঘ, বন মোরগ, বানর, বুনো শুকরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশু ও নানান পাখ পাখালি। এছাড়া দেখতে পারবেন কেওড়া, গেওয়া, সুন্দরী, ফাতরা, গরান, বাইন ও গোলপাতা গাছ।

চর বিজয়:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের গঙ্গামতী থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গভীর সাগরে জেগে উঠা মনোমুগ্ধকর এ দ্বীপ চর বিজয়ের অবস্থান। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে সমুদ্রের বুক চিড়ে এ চর জেগে ওঠে। তাই ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে স্থানীয় বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা সেখানে গিয়ে এ চরের নামকরণ করেন চরবিজয়। বছরের ৬ মাস জেগে থাকে এ চর। বর্ষা মৌসুমে চরটি ডুবে যায়। কুয়াকাটা সৈকত থেকে ট্রলার কিংবা স্পিড বোড যোগে সেখানে যেতে পারবেন। স্পিড বোডে মাত্র ৪০ মিনিটেই পৌঁছানো যায় সেখানে। চরবিজয় গেলে দেখতে পাবেন লাল কাঁকড়া আর হাজারো অতিথি পাখির বিচরণ। যাওয়ার সময় সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন জেলেদের মাছ শিকারের দৃশ্য। এছাড়া তিন মাসের জন্য চরে অস্থায়ী আবাস তৈরী করে জেলেরা। অনেকে মাছের শুঁটকি প্রস্তুত ও বিক্রি করেন। চরবিজয় গেলে এসব দৃশ্যও উপভোগ করতে পারবেন।

ক্রাব আইল্যান্ড বা লাল কাঁকড়ার চর:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্বদিকে গেলে দেখবেন ক্রাব আইল্যান্ড বা কাঁকড়ার দ্বীপ। সেখানে নির্জন সৈকতে ঘুরে বেড়ায় হাজার হাজার লাল কাঁকড়ার দল। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে বাস ছাড়া মোটরসাইকেল অথবা বিভিন্ন বাহন যোগে সড়ক পথে অথবা সৈকত হয়ে যেতে পারবেন লাল কাঁকড়ার চরে। সেখানে গেলে লাল কাঁকড়ার নাচানাচি এবং লাল কাঁকড়ার নিপুন ছোয়ায় আকা আলপনা উপভোগ করতে পারবেন। এ দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।

চর গঙ্গামতি:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্ব দিকে অবস্থিত চর গঙ্গামতি। সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে বাস ছাড়া যে কোন যানবাহনে সড়ক পথে অথবা বীচ হয়ে যেতে পারবেন চর গঙ্গামতি। সেখানে খুব ভোরে গেলে দেখতে পারবেন সূর্যোদয়ের দৃশ্য। সঙ্গে সকালের নাস্তা সারতে পারতে ইলিশ খিচুরি দিয়ে। এছাড়া উপভোগ করতে পারবেন হাজারো ঝাউ গাছসহ বিভিন্ন গাছ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখ পাখালি এবং জেলেদের মাছ শিকারে যাওয়ার প্রস্তুতির দৃশ্য।

গঙ্গামতির জঙ্গল:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্ব দিকে অবস্থিত গঙ্গামতির জঙ্গল। চরগঙ্গামতির ২ থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে এর অবস্থান। সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে বাস ছাড়া যে কোন যানবাহনে সড়ক পথে অথবা বীচ হয়ে যেতে পারবেন গঙ্গামতির জঙ্গলে। গঙ্গামতির জঙ্গলে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, পাখি, বন মোরগ-মুরগি, শিয়াল, বানর ইত্যাদির দেখা পেতে পারেন। এছাড়া বিশাল আয়াতনের এ সবুজবেষ্টনীর মাঝখান দিয়ে সমুদ্রে মিলিত হয়েছে একটি লেক। বলা যায় এটি গঙ্গামতির অংলকার। লেকের জোয়ার ভাটার স্রোতে চলা মাছ ধরা ট্রলারগুলো উপভোগ করতে পারবেন।

কুয়াকাটার জাতীয় উদ্যান ও ঝাউবন:

কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার পূর্বে এর অবস্থান। বাংলাদেশ বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা হয়েছে এ উদ্যানটি। বিশাল এলাকা জুড়ে হাজার হাজার উচু ঝাউ গাছ থাকায় এ স্থানটিকে স্থানীয়রা ঝাউবনও বলে। যে কোন যানবাহন বা সৈকত থেকে পায়ে হেটেও যেতে পারবেন সেখানে। সেখানে গেলে দেড় থেকে দুইশ ফুটের ঝাউগাছ এবং বিশাল এলাকজুড়ে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল দেখতে পারবেন।

ফ্রাই মার্কেট:

কুয়াকাটা সৈকতের মাত্র ১ কিলোমিটার পূর্ব দিকে এর অবস্থান। দুপুরের পর পরই পর্যটকদের আনাগোনায় জমাট হয়ে ওঠে এ মার্কেটটি। সেখানে গেলে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ বারবিকিউ ও ফ্রাই স্বচোক্ষে দেখে খেতে পারবেন। চাইলে নিজেও বারবিকিউ করে মাছ খেতে পারবেন।

কুয়াকাটার কুপ ও শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার:

কুয়াকাটার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার একটি প্রাচীন নিদর্শন। এটি রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি উপসনালয়। কুয়াকাটা চৌরাস্তার পূর্বপাশে এর অবস্থান। সেখানে গেলে দেখতে পাবেন ৩৭ মণ ওজনের অষ্টধাতুর তৈরি একটি প্রাচীন বৌদ্ধ মূর্তি। এছাড়া রাখাইনদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। এ বৌদ্ধ বিহারের পাশেই রয়েছে কুয়াকাটার প্রাচীন কুপ। এ কুপ থেকেই কুয়াকাটার নামকরণ হয়। এ কুপটিও দেখতে পাবেন সেখানে।

প্রাচীন নৌকা:

বেড়িবাঁধ লাগোয়া শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের পাশে বিশাল আকৃতির প্রায় ২ শ’ বছর আগের এ প্রাচীন নৌকাটির অবস্থান। ২০১২ সালে সমুদ্র সৈকতের অব্যাহত ভাঙনে বালু ক্ষয়ের ফলে সন্ধান মেলে ৭২ ফুট দৈর্ঘ্য, ২৪ ফুট প্রস্থ এবং ৯০ টন ওজনের এ কাঠের নৌকাটির। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের। পরে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নৌকা বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে এটিকে উত্তোলন করে বৌদ্ধ বিহারে পাশে সংরক্ষণ করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। সেখানে গেলে নৌকাটির আদি ইতিহাস জানতে পারবেন এবং নৌকাটি উপভোগ করতে পারবেন।

কেরানিপাড়া:

শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ মন্দিরের রাস্তা ধরে একটু উত্তরে কেরনিপাড়ার অবস্থান। রাখাইনদের এ পল্লীতে ২২ টি পরিবারের বসবাস রয়েছে। সেখানে গেলে দেখতে পাবেন রাখাইনদের জীবনাচরণ। বিশেষ করে রাখাইন নারীদের কাপড় বুনন ও তাদের হাতের বিন্নি ধানের পিঠা তৈরীর দৃশ্যও উপভোগ করতে পারবেন।

রাখাইন মার্কেট:

কেরানিপাড়ার দক্ষিনপাশে ও শ্রীমঙ্গলস্টেশনের বৌদ্ধ বিহারের পূর্ব পাশে এ মার্কেটের অবস্থান। সেখানে রাখাইনদের ২০ থেকে ২৫ টি দোকান রয়েছে। সেখান গেলে রাখাইন নারীদের হাতে তৈরী শালসহ বিভিন্ন কাপড় কিনতে পারবেন।

সীমা বৌদ্ধ বিহার:

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার উত্তরে লতাচপলী ইউনিয়নের মিশ্রিপাড়া গ্রামে সীমা বৌদ্ধবিহারের অবস্থান। সেখানে রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি। এছাড়া সেখানে রয়েছে ১০ থেকে ১২ টি রাখাইন পরিবারের বসবাস। কুয়াকাটা চৌরাস্তা থেকে মোটরসাইকেলসহ যে কোন যানবাহনে সড়কপথে সেখানে যেতে পারবেন। সেখানে গেলে উপমহাদেশের বড় বৌদ্ধ মূর্তিটি এবং রাখাইনদের জীবনাচারণ উপভোগ করতে পারেন। এছাড়া সেখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে গ্রামীণ দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন।

আলীপুর ও মহিপুর মৎস্য বন্দর:

কুয়াকাটা চৌরাস্ত থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় পাইকারী মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলীপুর বিএফডিসি মার্কেট। জেলেরা গভীর সাগর থেকে মাছ শিকার করে সেখানে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। কুয়াকাটা চৌরাস্তা থেকে যে কোন যানবাহনে পৌঁছাতে পারবেন সেখানে। সেখানে গেলে রূপালী ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের বেচা কেনা উভোগ করতে পারবেন। চাইলে তাজা এসব সামুদ্রিক মাছ কম দামে কিনে নিতে পারবেন। আলীপুরের পরই খাপড়াভাঙ্গা নদী। এ নদীর উত্তর পাশে মহিপুর বিএফডিসি মৎস্য মার্কেট। সেখানের আড়তগুলোতে চলে মাছ বেচা কেনা।