পায়রা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলায় উত্তাল সাগরে বাড়তি ঝুঁকি না নিয়ে তীরে ফিরছেন উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। তবে এমন বৈরী আবহাওয়ায় মাছ শূন্য ট্রলার নিয়েই নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে হয়েছে মৎস্য শিকারিদের।

জেলেরা জানান, মৎস্য শিকারে সরকারের টানা ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে কাঙ্খিত ইলিশের স্বপ্ন নিয়ে সমুদ্র যাত্রা করেছিলেন তারা। চার পাঁচ দিন ফিশিং করার পরেই বৈরী আবহাওয়ার কবলে পরে তীরে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

জেলে ইউনুস মাজি বলেন, সরকারের ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আশানুরূপ ইলিশের আশায় সমুদ্রে গিয়েছিলাম ৩-৪ দিন সমুদ্রের থাকার পরেই আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায় তাই শূন্য ট্রলার নিয়েই আবার ঘাটে ফিরছি।

জেলে সোবাহান মাজি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে সাড়ে তিন লাখ টাকার বাজার নিয়ে সমুদ্রে গিয়েছিলাম। তবে দুইদিন ফিশিং করার পরে সমুদ্র উত্তল হয়ে যাওয়ার সমুদ্রে থাকাটা ঝুঁকিপূর্ণ, তাই তীরে ফিরে এসেছি। তবে ইলিশ পাইনি অন্য প্রজাতির কিছু মাছ পেয়েছি ১ লাখ টাকার মত বিক্রি হবে।

বুধবার (১৮ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, খাপড়াভাঙ্গা নদীর দু’পাশে মহিপুর- আলীপুর মৎস্য বন্দর ঘাটে নোঙর করেছে শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার। উত্তাল ঢেউয়ের কবল থেকে জানমাল সুরক্ষার তাগিদে এসব ট্রলার নিয়ে জেলেরা তীরে ফিরে এসেছেন। তবে গতকাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। ট্রলারে থাকা ৪ জেলেকে ১৮ ঘণ্টা পরে উদ্ধার করা হয়।

আলীপুর বন্দরের সিফাত মৎস্য আড়ৎ মালিক মিজানুর রহমান বলেন, অনেক আশা নিয়ে সাগরযাত্রা করেছিলেন জেলে ভাইয়েরা। তবে হঠাৎ সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় অনেক জেলেরা ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরে এসেছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। এজন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১২১.১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে এবং আগামী পাঁচ দিন ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।

আলিপুর মৎস্য আড়ৎদার মালিক সমিতি সভাপতি জলিল ঘরামী (মনি ফিস) বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে ধার দেনা করে সমুদ্রে গিয়েছিলেন বন্দরের জেলেরা। হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ায়। ঘাটে ফিরে এসেছেন সবাই। শতকরা ৮০ শতাংশ ট্রলার খালি হাতে ফিরে এসেছেন।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞা শেষ গভীর সমুদ্রে ছুটছিলেন জেলরা। ভাগ্য তাদের সহায় হয়নি আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় জেলেদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে ট্রলার মালিক সহ জেলেদের। আশা করছি আবহাওয়া ভালো হয়ে যাবে তখন জেলেরা স্বাভাবিকভাবে মাছ শিকার করতে পারবেন। এ বছর সমুদ্রে বেশ ভালো পরিমাণ মাছের খবর পাওয়া যাচ্ছে।