ঢাকা ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য পেশা Logo ঋণ বাতিল করে জলবায়ু অর্থায়নের দাবিতে কলাপাড়ায় মানববন্ধন সাইকেল শোভাযাত্রা Logo ‎মির্জাগঞ্জে দাদীর সাথে অভিমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কুয়াকাটায় গৃহবধূ হত্যা মামলা আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

কুয়াকাটা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪৭২ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় গৃহবধূ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন। আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সংলগ্ন মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

জানা যায়, গত ২০ মার্চ রাতে স্বামী মেহেদী হাসান (২৩) তার স্ত্রী মাফিয়া বেগম (১৭) কে গলা টিপে হত্যার করে এমন অভিযোগ করে মাফিয়ার পরিবার।

কুয়াকাটা পৌরসভার পাঞ্জুপাড়া গ্রামের স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে মাফিয়ার পরিবার এটি হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবার বলছে এটি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় মহিপুর থানা একটি মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে মাফিয়ার পরিবারের।

এ ঘটনায় নিহতের মা হাফিজা বেগম বাদী হয়ে ১ এপ্রিল মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, পুলিশ ইচ্ছা করেই আসামিদের গ্রেফতার করছেন না।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী নিহত মাফিয়া বেগমের ভাই বনি আমিন বলেন, আমার বোনকে মারধরের পরে আমার বোন জামাই সহ পরিবারের লোকজন গলা টিপে হত্যা করে। পরে অসুস্থতা সাজিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। বোনকে হাসপাতালে রেখেই সকলে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় আমরা মামলা করতে গেলে মহিপুর থানা পুলিশ প্রথমে গড়িমসি করেন। পরে পহেলা এপ্রিল মামলা আমলে নিলেও কোন আসামিকে তারা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। আসামিদের লোকেশন সনাক্ত করে পুলিশকে খবর দিলেও অজ্ঞাত কারণে আসামিদের গ্রেফতার করছেন না।

মাফিয়ার মা হাফিজা বেগম ও ভাই বনি আমিন সহ তাদের পারিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রায় ৪ মাস আগে পারবারিকভাবে একই গ্রামের মেহেদী হাসানের (২২) সঙ্গে মাফিয়ার (১৬) বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী মেহেদী যৌতুকের দাবিতে মাফিয়াকে নির্যাতন করে আসছেন।

গত ২০ মার্চ দুপুরে মাফিয়া তার ছোটবোন মারিয়া (১০) কে তার স্বামীর বাড়িতে যেতে বলেন। এ সময় মারিয়া তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে ব্যাপক মারধর করছে দেখতে পেয়ে বাড়িতে এসে বলে দেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে মেহেদী তার শ্বশুর হারিছকে ফোন দিয়ে মাফিয়া গলায় দড়ি দিয়েছেন বলে জানান।

পরে মা হাফিজা বেগম ও বাবা হারিছ তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে মাফিয়ার পরিবার এটিকে হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবারের দাবি মাফিয়া সবার অগোচরে ঘরের দোতলায় গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

মামলার বাদী মাফিয়া বেগমের মা হাফিজা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনার ২৮ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনরকম সহযোগিতা করছেন না। আসামীরা এখনো ঘুরে বেড়ান আমাদের চোখের সামনে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু হানিফ বলেন, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সে বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কুয়াকাটায় গৃহবধূ হত্যা মামলা আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৪:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় গৃহবধূ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন। আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সংলগ্ন মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

জানা যায়, গত ২০ মার্চ রাতে স্বামী মেহেদী হাসান (২৩) তার স্ত্রী মাফিয়া বেগম (১৭) কে গলা টিপে হত্যার করে এমন অভিযোগ করে মাফিয়ার পরিবার।

কুয়াকাটা পৌরসভার পাঞ্জুপাড়া গ্রামের স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে মাফিয়ার পরিবার এটি হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবার বলছে এটি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় মহিপুর থানা একটি মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে মাফিয়ার পরিবারের।

এ ঘটনায় নিহতের মা হাফিজা বেগম বাদী হয়ে ১ এপ্রিল মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, পুলিশ ইচ্ছা করেই আসামিদের গ্রেফতার করছেন না।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী নিহত মাফিয়া বেগমের ভাই বনি আমিন বলেন, আমার বোনকে মারধরের পরে আমার বোন জামাই সহ পরিবারের লোকজন গলা টিপে হত্যা করে। পরে অসুস্থতা সাজিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। বোনকে হাসপাতালে রেখেই সকলে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় আমরা মামলা করতে গেলে মহিপুর থানা পুলিশ প্রথমে গড়িমসি করেন। পরে পহেলা এপ্রিল মামলা আমলে নিলেও কোন আসামিকে তারা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। আসামিদের লোকেশন সনাক্ত করে পুলিশকে খবর দিলেও অজ্ঞাত কারণে আসামিদের গ্রেফতার করছেন না।

মাফিয়ার মা হাফিজা বেগম ও ভাই বনি আমিন সহ তাদের পারিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রায় ৪ মাস আগে পারবারিকভাবে একই গ্রামের মেহেদী হাসানের (২২) সঙ্গে মাফিয়ার (১৬) বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী মেহেদী যৌতুকের দাবিতে মাফিয়াকে নির্যাতন করে আসছেন।

গত ২০ মার্চ দুপুরে মাফিয়া তার ছোটবোন মারিয়া (১০) কে তার স্বামীর বাড়িতে যেতে বলেন। এ সময় মারিয়া তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে ব্যাপক মারধর করছে দেখতে পেয়ে বাড়িতে এসে বলে দেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে মেহেদী তার শ্বশুর হারিছকে ফোন দিয়ে মাফিয়া গলায় দড়ি দিয়েছেন বলে জানান।

পরে মা হাফিজা বেগম ও বাবা হারিছ তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে মাফিয়ার পরিবার এটিকে হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবারের দাবি মাফিয়া সবার অগোচরে ঘরের দোতলায় গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

মামলার বাদী মাফিয়া বেগমের মা হাফিজা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনার ২৮ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনরকম সহযোগিতা করছেন না। আসামীরা এখনো ঘুরে বেড়ান আমাদের চোখের সামনে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু হানিফ বলেন, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সে বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।