ঢাকা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য পেশা Logo ঋণ বাতিল করে জলবায়ু অর্থায়নের দাবিতে কলাপাড়ায় মানববন্ধন সাইকেল শোভাযাত্রা Logo ‎মির্জাগঞ্জে দাদীর সাথে অভিমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

সন্তান বিক্রি করে মোবাইল ও নুপুর কিনলো মা

বিডি কাগজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:০১:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৮৬ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঘটে গেল হৃদয়বিদারক এক ঘটনা। মাত্র চার মাসের কোলের সন্তানকে মাত্র ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন এক মা। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহ, দারিদ্র্য আর মানসিক চাপের কারণেই এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। পরে সেই টাকায় নিজের শখের মোবাইল ফোন, পায়ের নূপুর আর নাকের নথ কেনেন।

ঘটনাটি ঘটে মধুপুর পৌর শহরের শেওড়াতলা এলাকায়। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে স্বামী থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।

জানা যায়, উপজেলার পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে গোপালপুরের লাবনী আক্তার লিজার দুই বছর আগে ফেসবুকের পরিচয়ের সূত্র ধরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সংসারে টানাপোড়েন চলছিল। চার মাস আগে তাদের ঘর আলোকিত করে আসে পুত্রসন্তান তামিম।

কিন্তু সংসারে শান্তির বদলে কলহ আরও বাড়ে। কিছুদিন আগে লাবনী আক্তার ছেলে তামিমকে নিয়ে বোনের বাড়ি যান। স্বামী রবিউল বারবার অনুরোধ করলেও ফেরেননি। এরপর হঠাৎ খবর আসে— তামিমকে বিক্রি করা হয়েছে।

রবিউল ইসলাম বলেন, “আমার ছেলেকে দেখতে চেয়েছিল তার দাদা। বারবার অনুরোধ করার পরও লাবনী ছেলেকে নিয়ে আসেনি। হঠাৎ খবর পাই, সে ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে কৌশলে তাকে এনে জিজ্ঞাসা করলে সে স্বীকার করে।”

শিশুটির মা লাবনী আক্তার লিজা বলেন, “আমার মাথা ঠিক ছিল না। মনির নামে এক জনের সাহায্যে ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে তামিমকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করি। ওই টাকা দিয়ে মোবাইল, নূপুর আর নাকের নথ কিনেছি। এটা আমার বড় ভুল হয়ে গেছে।”

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল কবীর জানান, “ঘটনার খবর পাওয়ার পর শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।”

এই ঘটনা শুধু এক পরিবারের নয় — সমাজেরও এক নির্মম বাস্তবতা। দারিদ্র্য, অবহেলা আর সামাজিক অস্থিরতা যেখানে মায়া-মমতাকেও টাকার কাছে হার মানায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

সন্তান বিক্রি করে মোবাইল ও নুপুর কিনলো মা

আপডেট সময় : ১০:০১:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঘটে গেল হৃদয়বিদারক এক ঘটনা। মাত্র চার মাসের কোলের সন্তানকে মাত্র ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন এক মা। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহ, দারিদ্র্য আর মানসিক চাপের কারণেই এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। পরে সেই টাকায় নিজের শখের মোবাইল ফোন, পায়ের নূপুর আর নাকের নথ কেনেন।

ঘটনাটি ঘটে মধুপুর পৌর শহরের শেওড়াতলা এলাকায়। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে স্বামী থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।

জানা যায়, উপজেলার পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে গোপালপুরের লাবনী আক্তার লিজার দুই বছর আগে ফেসবুকের পরিচয়ের সূত্র ধরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সংসারে টানাপোড়েন চলছিল। চার মাস আগে তাদের ঘর আলোকিত করে আসে পুত্রসন্তান তামিম।

কিন্তু সংসারে শান্তির বদলে কলহ আরও বাড়ে। কিছুদিন আগে লাবনী আক্তার ছেলে তামিমকে নিয়ে বোনের বাড়ি যান। স্বামী রবিউল বারবার অনুরোধ করলেও ফেরেননি। এরপর হঠাৎ খবর আসে— তামিমকে বিক্রি করা হয়েছে।

রবিউল ইসলাম বলেন, “আমার ছেলেকে দেখতে চেয়েছিল তার দাদা। বারবার অনুরোধ করার পরও লাবনী ছেলেকে নিয়ে আসেনি। হঠাৎ খবর পাই, সে ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে কৌশলে তাকে এনে জিজ্ঞাসা করলে সে স্বীকার করে।”

শিশুটির মা লাবনী আক্তার লিজা বলেন, “আমার মাথা ঠিক ছিল না। মনির নামে এক জনের সাহায্যে ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে তামিমকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করি। ওই টাকা দিয়ে মোবাইল, নূপুর আর নাকের নথ কিনেছি। এটা আমার বড় ভুল হয়ে গেছে।”

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল কবীর জানান, “ঘটনার খবর পাওয়ার পর শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।”

এই ঘটনা শুধু এক পরিবারের নয় — সমাজেরও এক নির্মম বাস্তবতা। দারিদ্র্য, অবহেলা আর সামাজিক অস্থিরতা যেখানে মায়া-মমতাকেও টাকার কাছে হার মানায়।