ঢাকা ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য পেশা Logo ঋণ বাতিল করে জলবায়ু অর্থায়নের দাবিতে কলাপাড়ায় মানববন্ধন সাইকেল শোভাযাত্রা Logo ‎মির্জাগঞ্জে দাদীর সাথে অভিমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

জলকেলির মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় রাখাইন সম্প্রদায়ের নববর্ষের সাংগ্রাইন উৎসব শুরু

কুয়াকাটা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:১৯:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে

উপকূলের অলংকার খ্যাত আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তম সাংগ্রাইন উৎসব শুরু হয়েছে জলকেলির মধ্য দিয়ে। শুক্রবার শেষ বিকেলে কুয়াকাটা রাখাইন মহিলা মার্কেট মাঠে তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম। কেরানীপাড়া সাংগ্রাইন উৎসব কমিটি জলকেলি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বাড়িতে বাড়িতে ফুল দিয়ে সাজানো, বিহারে মোমবাতি প্রজ্বলন এবং প্রার্থনা করা, নতুন পোশাক পড়ে প্রতিবেশীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখা করার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এ সাংগ্রাইন উৎসবটি।

রাখাইনদের তথ্য মতে, রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষের উৎসবের নাম। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে রাখাইনরা বিভিন্ন আনন্দ ও উৎসবের মধ্যে দিয়ে বর্ষবরণ করে নেয়। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ পানি খেলা।

রাখাইন‌ সম্প্রদায়ের নেতা এমং তালুকদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জনের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান, মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম, কুয়াকাটা পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান হাওলাদার, কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক শহিদুল ইসলাম শাহীন, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির সহ আরো অনেকে।

আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে রাখাইন সম্প্রদায়রা মেতে উঠে ঐতিহ্যের জলকেলি উৎসবে। অনুষ্ঠানে দেখা যায় নৌকায় রাখা পানি থেকে রাখাইন তরুণ তরুণীসহ সবাই মিলে একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে। ফুল দিয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। এসময় রাখাইনদের নিজস্ব সংস্কৃতি, নাচ আর গানে মাতিয়ে রাখে পুরো অনুষ্ঠানটি। উৎসবটি দেখতে ভীড় জমিয়েছে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। সাংগ্রাইন উৎসবটি আগামী ২০ এপ্রিল শেষ হবে।

কেরানীপাড়ার তরুন রাখাইন ওয়োনাইচে বলেন, পূরানো দুঃখকে ভুলে নতুন বছরে ভালো কিছু করার প্রত্যাশায় জলকেলিতে অংশ নিয়েছি। একটি বছর অপেক্ষা করি এমন দিনের জন্য। আমরা অনেক আনন্দ করছি।

মাচান বলেন, নববর্ষের শুরুতে আমরা নানান রকমের খাবার তৈরি করেছি। পূরানো দুঃখ কষ্টকে ভুলে নতুন বছরে ভালো কিছুর প্রত্যাশায় জাল কেলিতে অংশ নিয়েছি। টানা তিন দিন চলবে এই উৎসব। থাকবে মন জুড়ানো সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। রাখাইন সম্প্রদায়ের কিশোর কিশোরীরা গানে গানে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিবেন। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে রাখাইন পরিবারে তৈরি করা হয়েছে নানান পদের পিঠাপুলি। এটিকে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের বন্ধন বলে মনে করেন এখানকার রাখাইন সম্প্রদায়।

রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতা এমং তালুকদার বলেন, উৎসবকে ঘিরে সাজ সাজ রব রাখাইন পাড়ায়। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পাড়া থেকে যোগ দিয়েছে রাখাইনরা। পূরানো পাপ জলকেলির মাধ্যমে ধূয়ে মূছে নতুন বছরে ভালোভাবে শুরু করব।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটার রাখাইন সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জলকেলি। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ অনুষ্ঠানটিতে রাখাইন সম্প্রদায়ের নানা বয়সী মানুষের উপস্থিতি রয়েছে। অনুষ্ঠানটিতে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা ও আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

জলকেলির মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় রাখাইন সম্প্রদায়ের নববর্ষের সাংগ্রাইন উৎসব শুরু

আপডেট সময় : ০৭:১৯:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

উপকূলের অলংকার খ্যাত আদিবাসী রাখাইন সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তম সাংগ্রাইন উৎসব শুরু হয়েছে জলকেলির মধ্য দিয়ে। শুক্রবার শেষ বিকেলে কুয়াকাটা রাখাইন মহিলা মার্কেট মাঠে তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম। কেরানীপাড়া সাংগ্রাইন উৎসব কমিটি জলকেলি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বাড়িতে বাড়িতে ফুল দিয়ে সাজানো, বিহারে মোমবাতি প্রজ্বলন এবং প্রার্থনা করা, নতুন পোশাক পড়ে প্রতিবেশীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখা করার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এ সাংগ্রাইন উৎসবটি।

রাখাইনদের তথ্য মতে, রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষের উৎসবের নাম। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে রাখাইনরা বিভিন্ন আনন্দ ও উৎসবের মধ্যে দিয়ে বর্ষবরণ করে নেয়। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ পানি খেলা।

রাখাইন‌ সম্প্রদায়ের নেতা এমং তালুকদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জনের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান, মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম, কুয়াকাটা পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান হাওলাদার, কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক শহিদুল ইসলাম শাহীন, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির সহ আরো অনেকে।

আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে রাখাইন সম্প্রদায়রা মেতে উঠে ঐতিহ্যের জলকেলি উৎসবে। অনুষ্ঠানে দেখা যায় নৌকায় রাখা পানি থেকে রাখাইন তরুণ তরুণীসহ সবাই মিলে একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে। ফুল দিয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। এসময় রাখাইনদের নিজস্ব সংস্কৃতি, নাচ আর গানে মাতিয়ে রাখে পুরো অনুষ্ঠানটি। উৎসবটি দেখতে ভীড় জমিয়েছে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। সাংগ্রাইন উৎসবটি আগামী ২০ এপ্রিল শেষ হবে।

কেরানীপাড়ার তরুন রাখাইন ওয়োনাইচে বলেন, পূরানো দুঃখকে ভুলে নতুন বছরে ভালো কিছু করার প্রত্যাশায় জলকেলিতে অংশ নিয়েছি। একটি বছর অপেক্ষা করি এমন দিনের জন্য। আমরা অনেক আনন্দ করছি।

মাচান বলেন, নববর্ষের শুরুতে আমরা নানান রকমের খাবার তৈরি করেছি। পূরানো দুঃখ কষ্টকে ভুলে নতুন বছরে ভালো কিছুর প্রত্যাশায় জাল কেলিতে অংশ নিয়েছি। টানা তিন দিন চলবে এই উৎসব। থাকবে মন জুড়ানো সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। রাখাইন সম্প্রদায়ের কিশোর কিশোরীরা গানে গানে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিবেন। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে রাখাইন পরিবারে তৈরি করা হয়েছে নানান পদের পিঠাপুলি। এটিকে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের বন্ধন বলে মনে করেন এখানকার রাখাইন সম্প্রদায়।

রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতা এমং তালুকদার বলেন, উৎসবকে ঘিরে সাজ সাজ রব রাখাইন পাড়ায়। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পাড়া থেকে যোগ দিয়েছে রাখাইনরা। পূরানো পাপ জলকেলির মাধ্যমে ধূয়ে মূছে নতুন বছরে ভালোভাবে শুরু করব।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটার রাখাইন সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জলকেলি। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ অনুষ্ঠানটিতে রাখাইন সম্প্রদায়ের নানা বয়সী মানুষের উপস্থিতি রয়েছে। অনুষ্ঠানটিতে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা ও আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।