ঋণের চাপে দিশেহারা স্বজনরা
মির্জাগঞ্জে দেড় কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করে ব্যবসায়ী লাপাত্তা

- আপডেট সময় : ০৭:৩৫:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৪১৯ বার পড়া হয়েছে
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আপন ভাই ও মা’কে নিঃস্ব করে পুত্র বিভিন্ন ব্যাংক ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান একাধিক এনজিও থেকে বিভিন্ন নামে দেড় কোটি টাকা উত্তোলন করে মোঃ সাইদুল ইসলাম নামে এক মোবাইল ব্যবসায়ী পরিবারসহ লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঋনের টাকা পরিশোধে ব্যাংক ও এনজিও কর্মকর্তাদের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলামের ভাই মোঃ মহিব্বুল্লাহ ও তার ষাটোর্ধ বয়সী বৃদ্ধা মা।
নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানায় গতকাল শনিবার জিডি করেছেন তাঁর ছোট ভাই মহিবুল্লাহ। সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরস্থ সুবিদখালী কলেজ রোডস্থ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান “মৃধা মোবাইল শপ” তালাবদ্ধ করে গত ২১ জানুয়ারি থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আত্মগোপন করেন সাইদুল ইসলাম। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের ধনমানিক চত্রা গ্রামের মৃত আঃ ছাত্তার এর পূত্র।
ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলামের ছোট ভাই মাওলানা মোঃ মহিব্বুল্লাহ বলেন, তিন বছর পূর্বে আমার পিতার মৃত্যুর পর তার পেনশনের ১৬ লক্ষ টাকা নিয়ে সুবিদখালী কলেজ রোড এলাকায় ” মৃধা মোবাইল শপ” নামে একটি দোকান নিয়ে মোবাইলের ব্যবসা শুরু করেন। এর পর ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউসিবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিঃ, বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান আশা, ব্র্যাক, কোডেক,উদ্দীপন,জাগরণী চক্র ও জনতা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিডেট থেকে আমি ও আমার মায়ের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋন গ্রহন করে এবং আমাকে ও আমার মা’কে সহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে জামিনদার করে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা ঋন উত্তোলন করেন।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারী দোকান তালাবদ্ধ করে তিনি (মোঃ সাইদুল ইসলাম) তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে আত্মগোপন করেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি (০১৭৫০২৫৯১৭১)বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না, ও সে কোথায় আছে তাও জানিনা। এদিকে ব্যাংক ও এনজিওর লোকজন প্রতিদিন আমার বাড়িতে এসে আমাকে ও আমার মাকে ঋনের টাকা পরিশোধ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। ঋন পরিশোধের জন্য এনজিও ও ব্যাংকের লোকদের চাপে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমি একটি বেসরকারী মাদ্রাসায় খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে স্বল্প বেতনে চাকুরী করি, যা বেতন পাই তা দিয়ে আমার পরিবার নিয়ে জীবন -যাপন করা দূস্কর। এর মধ্যে ব্যাংক ও এনজিওর ঋনের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।
জনতা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ, দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিঃ সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে বড় অংকের ঋন গ্রহন করে পরিশোধ না করে আত্মগোপনে থাকার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও মাঠকর্মীগন।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শামীম হাওলাদার জানান, এ ঘটনায় থানায় নিঁখোজ হওয়ার বিষয়ে একটি জিডি করেছেন তার ভাই। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ইউ জি/এএ