ঢাকা ১০:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য পেশা Logo ঋণ বাতিল করে জলবায়ু অর্থায়নের দাবিতে কলাপাড়ায় মানববন্ধন সাইকেল শোভাযাত্রা Logo ‎মির্জাগঞ্জে দাদীর সাথে অভিমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

জুলাই আন্দোলনে বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল, বিপাকে চিকিৎসক

আল-আমিন অনিক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৬২৩ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পদোন্নতি পেয়ে সদ্য যোগদান করা চিকিৎসক ড. জে এইচ খান লেলিন কে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কথাবার্তা ঘুরপাক খাচ্ছে।

তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেয়া একটি পোস্টকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। দ্রুত বিষয়টি ভাইরাল হয় যেখানে লেখা রয়েছে ‘দে দে মরন কামড় দে, দেরি করিস না, অস্তিত্বে বাংলাদেশ শেখ হাসিনা।’

এই লেখার সাথে ডাক্তার জে এইচ খান লেলিনের ছবি যোগ করে তাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে উল্লেখ করে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি বাতিলের দাবি করা হয়েছে। কেউ বা বিচার দাবি করেছেন।

অভিযোগ রয়েছেন, তিনি দীর্ঘ এক যুগের ও বেশি কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিগত আ.লীগ সরকারের তৎকালীন নেতাদের যোগসাজশে হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। কয়েক বছরে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠে।

রোগীদের সাথে অসদাচরণ, টেস্ট বাণিজ্য, সরকারি জমি বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, অবহেলায় তার হাতে মৃত্যু হয়েছে অনেক রোগী এমন অহরহ অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন রকম টেস্ট দিয়ে তার নিজস্ব ক্লিনিক ম্যাক্স এবং কলাপাড়া ক্লিনিকে টেস্ট করাতে বাধ্য করেন রোগীদের।

অভিযোগ রয়েছে , ২০২১ সালে ডা. লেলিনের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ রুনা (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর হয়। মৃত্যু প্রসূতি রুনা কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জসিমের স্ত্রী।

২০২২ সালে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাউবোর সরকারি জায়গার পজিশন বিক্রি করে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মামলাও  হয়েছিলো। কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোভন শাহরিয়ারের আদালত  এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), পটুয়াখালীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে বিচার কাজ থেমে যায়। উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামের মোসা. মরিয়ম জাহান নূপুর প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগে ডা. লেলিনের নামে এ মামলা দায়ের করেন।

২০২৩ সালে তার ভুল চিকিৎসায় স্বপন সিকদার নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছিলেন উপজেলা আইনজীবী কল্যাণ সমিতি। এ কর্মসূচিতে স্বপন সিকদারের স্বজন ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে ডঃ লেলিন বলেন, যখন যে সরকার আসে আমরা তার হয়ে কাজ করি। তবে তার ফেসবুক আইডি থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে গিয়ে বিভিন্ন রকম পোস্ট দেওয়া হয় যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।

তবে ডাক্তার জে এইচ খান লেলিন আরও জানান, তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করা হয়েছিল। তখন হয়তো পরিকল্পিতভাবে এই পোস্ট করা হয়েছে। তবে পোষ্টের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। তার শেয়ারকৃত মালিকানাধীন ক্লিনিকের কথা ও অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডঃ হুমায়ুন কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

জুলাই আন্দোলনে বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল, বিপাকে চিকিৎসক

আপডেট সময় : ০৬:৪২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পদোন্নতি পেয়ে সদ্য যোগদান করা চিকিৎসক ড. জে এইচ খান লেলিন কে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কথাবার্তা ঘুরপাক খাচ্ছে।

তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেয়া একটি পোস্টকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। দ্রুত বিষয়টি ভাইরাল হয় যেখানে লেখা রয়েছে ‘দে দে মরন কামড় দে, দেরি করিস না, অস্তিত্বে বাংলাদেশ শেখ হাসিনা।’

এই লেখার সাথে ডাক্তার জে এইচ খান লেলিনের ছবি যোগ করে তাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে উল্লেখ করে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি বাতিলের দাবি করা হয়েছে। কেউ বা বিচার দাবি করেছেন।

অভিযোগ রয়েছেন, তিনি দীর্ঘ এক যুগের ও বেশি কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিগত আ.লীগ সরকারের তৎকালীন নেতাদের যোগসাজশে হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। কয়েক বছরে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠে।

রোগীদের সাথে অসদাচরণ, টেস্ট বাণিজ্য, সরকারি জমি বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, অবহেলায় তার হাতে মৃত্যু হয়েছে অনেক রোগী এমন অহরহ অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন রকম টেস্ট দিয়ে তার নিজস্ব ক্লিনিক ম্যাক্স এবং কলাপাড়া ক্লিনিকে টেস্ট করাতে বাধ্য করেন রোগীদের।

অভিযোগ রয়েছে , ২০২১ সালে ডা. লেলিনের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ রুনা (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর হয়। মৃত্যু প্রসূতি রুনা কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জসিমের স্ত্রী।

২০২২ সালে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাউবোর সরকারি জায়গার পজিশন বিক্রি করে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মামলাও  হয়েছিলো। কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোভন শাহরিয়ারের আদালত  এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), পটুয়াখালীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে বিচার কাজ থেমে যায়। উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামের মোসা. মরিয়ম জাহান নূপুর প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগে ডা. লেলিনের নামে এ মামলা দায়ের করেন।

২০২৩ সালে তার ভুল চিকিৎসায় স্বপন সিকদার নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছিলেন উপজেলা আইনজীবী কল্যাণ সমিতি। এ কর্মসূচিতে স্বপন সিকদারের স্বজন ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে ডঃ লেলিন বলেন, যখন যে সরকার আসে আমরা তার হয়ে কাজ করি। তবে তার ফেসবুক আইডি থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে গিয়ে বিভিন্ন রকম পোস্ট দেওয়া হয় যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।

তবে ডাক্তার জে এইচ খান লেলিন আরও জানান, তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করা হয়েছিল। তখন হয়তো পরিকল্পিতভাবে এই পোস্ট করা হয়েছে। তবে পোষ্টের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। তার শেয়ারকৃত মালিকানাধীন ক্লিনিকের কথা ও অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডঃ হুমায়ুন কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।