ঢাকা ১০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য পেশা Logo ঋণ বাতিল করে জলবায়ু অর্থায়নের দাবিতে কলাপাড়ায় মানববন্ধন সাইকেল শোভাযাত্রা Logo ‎মির্জাগঞ্জে দাদীর সাথে অভিমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নয় কোটি টাকায় ওয়াকিং জোন করার সিদ্ধান্ত

বর্জ্য দখল দূষণে অস্তিত্ব সংকটে খালটি

বিশেষ প্রতিবেদন
  • আপডেট সময় : ০১:৫৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৪১০ বার পড়া হয়েছে

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় কলাপাড়া পৌরশহরের মাঝখানের খালটি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। পারিবারিকসহ সকল ধরনের বর্জ্য এই খালটিতে ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এখন আর পানির প্রবাহ নেই। ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পানির চলাচল বন্ধ হয়ে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। খালপাড়ের বাসীন্দারা দূর্গন্ধে থাকতে পারছেন না।
পৌরবাসীর প্রাণখ্যাত তিনদিকে বহমান খালটি রক্ষায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বহুবার মানববন্ধনসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পালন করে আসছে। পরিবেশ আইনবিদ সংগঠন বেলার উদ্যোগে খালটির চিঙ্গরিয়া অংশের প্রায় এক কিলোমিটার অংশের বাঁধ অপসারণ করে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু ওই অংশের বাকিটুকু আর উদ্ধার হয়নি। এছাড়া স্লুইসগেট থেকে রহমতপুর পর্যন্ত মূল অংশ এখন অস্তিত্ত্ব সংকটে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খালটির দুই পাড় দখলে আগেই সংকুচিত হয়ে গেছে। এরই মধ্যে যতটুকু রয়েছে তাতে পারিবারিক বর্জ্য থেকে শুরু করে ব্যবহারের অপ্রয়োজনীয় খাতা-বালিশ পর্যন্ত খালটিতে ফেলা হয়েছে। পলিথিন আর প্লাস্টিকতো আছেই। দুই পাড়ের বাসীন্দারা খালটিতে শত শত টয়লেট স্থাপন করেছে। আবার অধিকাংশরা বাসার টয়লেটের আউটলাইন খালে দিয়ে রেখেছে। বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আনুমানিক তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খালটির এতিমখানার দ্বিতীয় পোলের পরে এখন আর জোয়ারের পানি প্রবহমান থাকে না। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হওয়ায় রহমতপুর পর্যন্ত অংশের সকল বর্জ্য ময়লা আবর্জনা পঁচে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

শহরের বাসীন্দা স্থপতি ইয়াকুব খান বলেন, ‘ খালটিকে সবাই দেখেশুনে উদার ও নগ্ন চিত্তে ব্যবহার করছে।’ আতিফ ইসলাম আরিফ বলেন, ‘এই খালটাই আমাদের শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছে, বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা। মশা চাষের উপযোগী। কিছুদিন এভাবে থাকলে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাবে।’

শাহজালাল মৃধা বলেন, খালটি খনন করা দরকার। রুবেল হাওলাদার বলেন, দুর্গন্ধ আর মশা মাছির কারখানা এই খাল, দুর্ভাগ্য আমাদের দেখার কেউ নেই।’ দ্রুত খালটি খনন করে শরহরবাসীকে স্বস্তি দেওয়ার দাবি সচেতন মহলের। ইতিপূর্বে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়রা এবং পরিবেশ কর্মীরা খালটি দখল-দূষণ বন্ধে এবং ময়লা-আবর্জনা অপসারণের দাবি করে আসছে। কিছু তারা কর্ণপাত করেননি। কলাপাড়া পৌরসভার অর্ধলাখ মানুষের আকুতি খালটি রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

পরিবেশ কর্মী নজরুল ইসলাম জানান, সীমানা চিহ্নিত করে খালটি রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

কলাপাড়া পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, খালটির দখল-দূষণ বন্ধে এবং বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া খালটি সীমানা চিহ্নিতের কাজ শুরু হয়েছে। খনন শেষে খালের দুই পাড় বাধাই করে স্লোপে ব্লক স্থাপন করে ওয়াকিং জোন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘গুরুত্ত্বপুর্ণ নগর অবকাঠামো প্রকল্পের’ আওতায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় নয় কোটি টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

নয় কোটি টাকায় ওয়াকিং জোন করার সিদ্ধান্ত

বর্জ্য দখল দূষণে অস্তিত্ব সংকটে খালটি

আপডেট সময় : ০১:৫৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় কলাপাড়া পৌরশহরের মাঝখানের খালটি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। পারিবারিকসহ সকল ধরনের বর্জ্য এই খালটিতে ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এখন আর পানির প্রবাহ নেই। ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পানির চলাচল বন্ধ হয়ে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। খালপাড়ের বাসীন্দারা দূর্গন্ধে থাকতে পারছেন না।
পৌরবাসীর প্রাণখ্যাত তিনদিকে বহমান খালটি রক্ষায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বহুবার মানববন্ধনসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পালন করে আসছে। পরিবেশ আইনবিদ সংগঠন বেলার উদ্যোগে খালটির চিঙ্গরিয়া অংশের প্রায় এক কিলোমিটার অংশের বাঁধ অপসারণ করে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু ওই অংশের বাকিটুকু আর উদ্ধার হয়নি। এছাড়া স্লুইসগেট থেকে রহমতপুর পর্যন্ত মূল অংশ এখন অস্তিত্ত্ব সংকটে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খালটির দুই পাড় দখলে আগেই সংকুচিত হয়ে গেছে। এরই মধ্যে যতটুকু রয়েছে তাতে পারিবারিক বর্জ্য থেকে শুরু করে ব্যবহারের অপ্রয়োজনীয় খাতা-বালিশ পর্যন্ত খালটিতে ফেলা হয়েছে। পলিথিন আর প্লাস্টিকতো আছেই। দুই পাড়ের বাসীন্দারা খালটিতে শত শত টয়লেট স্থাপন করেছে। আবার অধিকাংশরা বাসার টয়লেটের আউটলাইন খালে দিয়ে রেখেছে। বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আনুমানিক তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খালটির এতিমখানার দ্বিতীয় পোলের পরে এখন আর জোয়ারের পানি প্রবহমান থাকে না। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হওয়ায় রহমতপুর পর্যন্ত অংশের সকল বর্জ্য ময়লা আবর্জনা পঁচে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

শহরের বাসীন্দা স্থপতি ইয়াকুব খান বলেন, ‘ খালটিকে সবাই দেখেশুনে উদার ও নগ্ন চিত্তে ব্যবহার করছে।’ আতিফ ইসলাম আরিফ বলেন, ‘এই খালটাই আমাদের শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছে, বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা। মশা চাষের উপযোগী। কিছুদিন এভাবে থাকলে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাবে।’

শাহজালাল মৃধা বলেন, খালটি খনন করা দরকার। রুবেল হাওলাদার বলেন, দুর্গন্ধ আর মশা মাছির কারখানা এই খাল, দুর্ভাগ্য আমাদের দেখার কেউ নেই।’ দ্রুত খালটি খনন করে শরহরবাসীকে স্বস্তি দেওয়ার দাবি সচেতন মহলের। ইতিপূর্বে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়রা এবং পরিবেশ কর্মীরা খালটি দখল-দূষণ বন্ধে এবং ময়লা-আবর্জনা অপসারণের দাবি করে আসছে। কিছু তারা কর্ণপাত করেননি। কলাপাড়া পৌরসভার অর্ধলাখ মানুষের আকুতি খালটি রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

পরিবেশ কর্মী নজরুল ইসলাম জানান, সীমানা চিহ্নিত করে খালটি রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

কলাপাড়া পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, খালটির দখল-দূষণ বন্ধে এবং বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া খালটি সীমানা চিহ্নিতের কাজ শুরু হয়েছে। খনন শেষে খালের দুই পাড় বাধাই করে স্লোপে ব্লক স্থাপন করে ওয়াকিং জোন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘গুরুত্ত্বপুর্ণ নগর অবকাঠামো প্রকল্পের’ আওতায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় নয় কোটি টাকা।