মাদ্রাসা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

- আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৫৬৯ বার পড়া হয়েছে
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা নিয়োগ বাণিজ্যের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। তারা ক্লাস বর্জন করে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।
বুধবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে শিক্ষকদের তালাবদ্ধ রেখে তারা ক্লাস বর্জন করে এবং মাদ্রাসার মাঠে অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে দ্রুত তার মুক্তির দাবি জানায়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, মোস্তাফিজুর রহমান একজন সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা বলেন, “আমাদের সম্মানিত স্যারকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা এই ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং দ্রুত তার মুক্তি চাই।”
বিক্ষোভের খবর পেয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীদের সমঝোতার মাধ্যমে লাইব্রেরির তালা খুলে দেন। এসময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান, মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এবং থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের মাহবুব এলাহী নামের এক ব্যক্তি কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, তিনি চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ লেনদেন করেছেন। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, এটি একটি সাজানো মামলা, যা একজন সৎ শিক্ষকের সম্মান নষ্ট করার অপচেষ্টা।
মামলার শুনানিতে গতকাল মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তার এই গ্রেপ্তারের খবর জানার পর থেকেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছে, যতদিন না তাদের প্রিয় অধ্যক্ষ মুক্তি পাবেন, ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
এদিকে, উপজেলা প্রশাসন ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা তাদের প্রিয় শিক্ষককে মুক্ত না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে।