অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন’র পথরোধ করে বিএনপি বেয়াদবি করেছে এমন শিরোনামে একটি পোস্ট দেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

আ ফ ম খালিদ হোসাইন সমর্থক গোষ্ঠী নামক ফেসবুক আইডি থেকে গত ২ জানুয়ারী এই পোস্টটি করা হয়। সেখানে বিএনপি’র পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসক, মহিপুর থানার ওসির দায়িত্ব কর্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাদেরকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

এমন পোস্টকে কেন্দ্র করে কমেন্ট বক্সে পক্ষে বিপক্ষে নানা রকম মন্তব্য করা হয়েছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। পোস্টে ধর্ম উপদেষ্টার পথরোধ করে বিএনপির মিছিল করার কথা বলা হয়েছে তা সত্যি নয়। পথরোধ করার মত এমন কোন ঘটনা সেখানে ঘটেনি বলে জানান মহিপুর থানা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তাদের দাবি একটি পক্ষ্য ফেক আইডি দিয়ে এমন অপপ্রচারণা চালিয়ে ধর্ম উপদেষ্টার সম্মানহানি সহ বিএনপির সুনাম নস্ট করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। ধর্ম উপদেষ্টার সম্মানের সাথে রাষ্ট্রের সম্মান জড়িত। তাকে নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালিয়ে অপরাধ করেছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে মহিপুর থানা বিএনপি।

জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন “জামি’আ মুহিউসসুন্নাহ আলীপুর” আয়োজিত ৩য় বার্ষিক তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান ও শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণের লক্ষ্যে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় সফরে আসে।

একই দিন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনকে গন সংবর্ধনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহিপুর থানা বিএনপি। ধর্ম উপদেষ্টা শেখ রাসেল সেতু পার হবার সময় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিছিল নিয়ে আসা বিএনপির নেতাকর্মীরা আসছিলো। বিএনপির নেতৃবৃন্দের সহায়তায় মিছিল বন্ধ করে ধর্ম উপদেষ্টার গাড়ি বহরকে সেতু পার হতে সহায়তা করে। এসময় ২-৩ মিনিটের জন্য ধর্ম উপদেষ্টার গাড়ি আটকে ছিল। এই বিষয়টি নিয়ে জামি’আ মুহিউসসুন্নাহ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাদের হীন স্বার্থে ফেক আইডি দিয়ে বিএনপিকে নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে এমন দাবি স্থানীয় বিএনপির।

এ বিষয়ে মহিপুর থানা বিএনপি’র সাধারণ-সম্পাদক এ্যাডভোকেট শাহজাহান পারভেজ বলেন, ধর্ম উপদেষ্টার পথরোধ করার মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে জামি’য়া মহিউসুন্নাহ ফাউন্ডেশন। গণ-সংবর্ধণার তারিখ আগে থেকেই নির্ধারিত। একই তারিখে মাহফিলের আয়োজন করা এটা একটা পরিকল্পিত চক্রান্ত। তিনি বলেন, ফেসবুকে বিএনপির বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টার সফর সঙ্গী সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ আবুবকর সিদ্দিক বলেন, কুয়াকাটায় ধর্ম উপদেষ্টার সফর সঙ্গী হিসেবে আমিও তার সাথে ছিলাম। কেউ পথরোধ করেনি এবং কোন অপ্রতিকর ঘটনাও ঘটেনি। সুন্দর ভাবেই প্রোগ্রাম সফল হয়েছে। তিনি বলেন, পোষ্টের বিষয়ে আমরা অবগত নই। এটা কে বা কাহারা দিয়েছে জানা নেই।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি এবং ধর্ম উপদেষ্টার একই দিনে সমাবেশ হওয়ায় রাস্তায় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যা কয়েক মিনিটের মধ্যে সমাধান হয়েছে।কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সভা দুটি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, ফেইসবুক পোস্টের বিষয়ে তার জানা নেই। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন, বানোয়াট। ধর্ম উপদেষ্টা আগমনের পর তাকে আমি রিসিভ করেছি। সমাবেশ শেষে তাকে এগিয়ে দিয়েছি। সেখানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।