ঢাকা ১০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য পেশা Logo ঋণ বাতিল করে জলবায়ু অর্থায়নের দাবিতে কলাপাড়ায় মানববন্ধন সাইকেল শোভাযাত্রা Logo ‎মির্জাগঞ্জে দাদীর সাথে অভিমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা Logo তিন বছর ধরে ঝুঁলে আছে আয়রণ ব্রিজ, ভোগান্তি চরমে  Logo মৎস্যজীবী দল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা Logo বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে, উত্তাল সমুদ্রে মাতোয়ারা হাজারো পর্যটক Logo মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাদী শ্রীঘরে Logo কুয়াকাটায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ, ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের আঘাতে জেলের মৃত্যু Logo মির্জাগঞ্জে ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo মহিপুরে পাওনা টাকার জেরে জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কুয়াকাটায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে রাখাইন নারীর ক্ষেতের ধান কেটে নেয়ার অভিযোগ

কুয়াকাটা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৬:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৪২২ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে রাখাইনদের ক্ষেতের আড়াই’শ মণ ধান কেটে নেয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে কুয়াকাটা কেরানী পাড়ার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের সহ সভাপতি লুমা রাখাইন। বুধবার দুপুর ১টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে এমন অভিযোগ এনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ওই রাখাইন নারী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লুমা রাখাইন বলেন, কুয়াকাটা পৌরসভা সংলগ্ন লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা এলাকায় তার ৭.১৮ একর জমি রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ওই জমির ধান কাটার মেশিন দিয়ে কেটে রাখা হয়। ওইদিন বিকেলে মহিপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আলী আক্কাসের নেতৃত্বে ৩০-থেকে ৩৫ জন লোক জোরপূর্বক তার ক্ষেতের আড়াই’শ মণ ধান লুট করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুলতান মুসুল্লিকে অবহিত করলে আলী আক্কাস তার কথা শুনছে বলে জানান। তিনি মামলা করার পরামর্শ দেন। আমি মামলা না করে আপনাদের দারস্থ হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে আমি বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে জানতে চাই, তারা কি লুটপাট করার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী পুষছে। যা তারা এখন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না এমন প্রশ্ন এই রাখাইন নেত্রীর।

লুমা রাখাইন আরো বলেন, কুয়াকাটার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা মৌজায় ১৯৭ নং খতিয়ানে ৭.১৮ একর জমির মালিক আমার বাবা মংচিং কবিরাজ। সে জীবিত থাকাকালে পুরো সম্পত্তি স্থানীয় মংফরম তালুকদারের কাছে মৌখিকভাবে বিক্রি করেন। তবে কোনো প্রকার রেজিস্ট্রি দলিল হয়নি, তার আগে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করে। এমবস্থায় আমার আর কোনো সম্পত্তি না থাকায় বাবার নেয়া পুরো টাকা মংফরম তালুকদারকে ফেরত দিয়ে পুরো সম্পত্তি ফেরত আনি। এই বিষয়টি কলাপাড়া সাবরেস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এভিডেভিট করা হয়। ওই সম্পতির বিএস রেকর্ড আমার নামে রয়েছে। আমি নিয়মিত খাজনা দিয়ে আসছি।

তিনি জানান, এমংচি ওরফে ইয়াইমাচিং নামে তার এক ভাই রয়েছে। যিনি প্রায় ৪৫ বছর ধরে মায়ানমারে বসবাস করে। ২০১০ সালে দেশে ফিরে আসলে তার ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া সম্পত্তি দাবী করলে আমি তার পাওনা ২.৪০ একর সম্পত্তি তাকে ফেরত দেই। পরবর্তীতে ওই সম্পত্তি আমার কাছে বিক্রি করে দেয় আমার ভাই। এতদিন আমি সেই পুরো সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছি।

যুবদল নেতা আলী আক্কাসের কুপরামর্শে আমার ভাই আমার বিরুদ্ধে ২০২২ সালে একটি মিথ্যা দেওয়ানী মামলা দায়ের করে। সে মামলায় আক্কাসকে বিবাদী করে, যাতে তারা উভয় মিলে আমার সম্পত্তি দখল করিতে পারে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান।

লুমা রাখাইন আরো বলেন, আক্কাসের নেতৃত্বে আমার জমি দখল করা হবে এমন খবরে আমিকু য়াকাটা পৌর বিএনপি এবং লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কাজে জানালে তারা কাগজপত্র দেখে আক্কাসকে জমির কাছে যেতে নিষেধ করেন। এ সময় পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মাঈনুল ইসলাম মান্নান উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু যুবদল নেতা আক্কাস তাদের কথা অমান্য করে গতকাল মঙ্গলবার আমার ক্ষেতের ধান কেটে নিয়ে যায়। ধান লুট করে নেয়ার সময় তারা সকলে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জে সজ্জিত হয়ে এ লুটপাট চালায়। যার কারণে আমরা বাঁধা দিতে সাহস পাইনি। এ বিষয়ে মামলা করতে চাইলে তারা জীবন নাশের হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, আমি একজন সংখ্যালঘু। তাই জনবল কম থাকায় আমার সম্পত্তি যুবদল নেতার নেতৃত্বে দখলসহ লুটপাট করা হয়েছে। আমি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে মহিপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আলী আক্কাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

কুয়াকাটায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে রাখাইন নারীর ক্ষেতের ধান কেটে নেয়ার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৪:৪৬:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে রাখাইনদের ক্ষেতের আড়াই’শ মণ ধান কেটে নেয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে কুয়াকাটা কেরানী পাড়ার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের সহ সভাপতি লুমা রাখাইন। বুধবার দুপুর ১টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে এমন অভিযোগ এনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ওই রাখাইন নারী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লুমা রাখাইন বলেন, কুয়াকাটা পৌরসভা সংলগ্ন লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা এলাকায় তার ৭.১৮ একর জমি রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ওই জমির ধান কাটার মেশিন দিয়ে কেটে রাখা হয়। ওইদিন বিকেলে মহিপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আলী আক্কাসের নেতৃত্বে ৩০-থেকে ৩৫ জন লোক জোরপূর্বক তার ক্ষেতের আড়াই’শ মণ ধান লুট করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুলতান মুসুল্লিকে অবহিত করলে আলী আক্কাস তার কথা শুনছে বলে জানান। তিনি মামলা করার পরামর্শ দেন। আমি মামলা না করে আপনাদের দারস্থ হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে আমি বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে জানতে চাই, তারা কি লুটপাট করার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী পুষছে। যা তারা এখন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না এমন প্রশ্ন এই রাখাইন নেত্রীর।

লুমা রাখাইন আরো বলেন, কুয়াকাটার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা মৌজায় ১৯৭ নং খতিয়ানে ৭.১৮ একর জমির মালিক আমার বাবা মংচিং কবিরাজ। সে জীবিত থাকাকালে পুরো সম্পত্তি স্থানীয় মংফরম তালুকদারের কাছে মৌখিকভাবে বিক্রি করেন। তবে কোনো প্রকার রেজিস্ট্রি দলিল হয়নি, তার আগে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করে। এমবস্থায় আমার আর কোনো সম্পত্তি না থাকায় বাবার নেয়া পুরো টাকা মংফরম তালুকদারকে ফেরত দিয়ে পুরো সম্পত্তি ফেরত আনি। এই বিষয়টি কলাপাড়া সাবরেস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এভিডেভিট করা হয়। ওই সম্পতির বিএস রেকর্ড আমার নামে রয়েছে। আমি নিয়মিত খাজনা দিয়ে আসছি।

তিনি জানান, এমংচি ওরফে ইয়াইমাচিং নামে তার এক ভাই রয়েছে। যিনি প্রায় ৪৫ বছর ধরে মায়ানমারে বসবাস করে। ২০১০ সালে দেশে ফিরে আসলে তার ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া সম্পত্তি দাবী করলে আমি তার পাওনা ২.৪০ একর সম্পত্তি তাকে ফেরত দেই। পরবর্তীতে ওই সম্পত্তি আমার কাছে বিক্রি করে দেয় আমার ভাই। এতদিন আমি সেই পুরো সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছি।

যুবদল নেতা আলী আক্কাসের কুপরামর্শে আমার ভাই আমার বিরুদ্ধে ২০২২ সালে একটি মিথ্যা দেওয়ানী মামলা দায়ের করে। সে মামলায় আক্কাসকে বিবাদী করে, যাতে তারা উভয় মিলে আমার সম্পত্তি দখল করিতে পারে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান।

লুমা রাখাইন আরো বলেন, আক্কাসের নেতৃত্বে আমার জমি দখল করা হবে এমন খবরে আমিকু য়াকাটা পৌর বিএনপি এবং লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কাজে জানালে তারা কাগজপত্র দেখে আক্কাসকে জমির কাছে যেতে নিষেধ করেন। এ সময় পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মাঈনুল ইসলাম মান্নান উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু যুবদল নেতা আক্কাস তাদের কথা অমান্য করে গতকাল মঙ্গলবার আমার ক্ষেতের ধান কেটে নিয়ে যায়। ধান লুট করে নেয়ার সময় তারা সকলে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জে সজ্জিত হয়ে এ লুটপাট চালায়। যার কারণে আমরা বাঁধা দিতে সাহস পাইনি। এ বিষয়ে মামলা করতে চাইলে তারা জীবন নাশের হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, আমি একজন সংখ্যালঘু। তাই জনবল কম থাকায় আমার সম্পত্তি যুবদল নেতার নেতৃত্বে দখলসহ লুটপাট করা হয়েছে। আমি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে মহিপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আলী আক্কাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়।